গতকালই আরজি কর কাণ্ডে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগগে গ্রেফতার করা হয়েছিল টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। সেখানে সন্দীপ ঘোষকেও এই মামলায় 'অ্যারেস্ট শোন' করা হয়। এই আবহে আজ আদালতে পেশ করা হয় অভিজিৎকে। সেখানে অভিজিৎ এবং সন্দীপকে হেফাজতে নিয়ে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই। এরই সঙ্গে সিবিআই দাবি করে, এই ঘটনা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। (আরও পড়ুন: 'CM-র বাড়ি যাওয়ার আগে', জুনিয়র ডাক্তারদের 'কথা কাটাকাটির' অডিয়ো ফাঁস কুণালের)
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই লক্ষ্মীলাভ, কলকাতায় সরকারের কাজ করা ১৫০০০ কর্মীর জন্য় বড় সুখবর
আজ আদালতে অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়ে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, 'গোটা অপরাধকে লঘু দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং ধামাচামা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তাঁরা তাঁদের দায়িত্বে গাফিলতি ছিল। পুলিশ নিজের কাজ করেনি। অভিজিৎ মণ্ডল পুলিশকর্মী বলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি অভিযুক্ত বলেই গ্রেফতার করা হয়েছে।' এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, 'এই ধরনের মামলায় সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর করা হয়। কিন্তু প্রথমে আত্মহত্যা বলা হয়েছিল। কিন্তু দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যৌন নির্যাতন হয়েছে। অনেক দেরিতে সব কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এদিকে সন্দীপ ওই মেডিক্যাল কলেজের মাথায় ছিলেন। ওঁরা ঠিক ভাবে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেননি।' আজ সিবিআই জানায়, অভিজিৎ এবং সন্দীপকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: 'লাইনে এরপর… তাই চন্দ্রিমাকে CM বলেন', কালীঘাটের বৈঠক নিয়ে উঠল বিস্ফোরক অভিযোগ
এদিকে সিবিআই স্পষ্ট ভাবে জানায়, পুলিশ বনাম সিবিআই কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের তরফ থেকে সওয়ালকারী আইনজীবী বলেন, 'অনেকে বলছেন পুলিশ এবং সিবিআইয়ের মধ্যে টানাটানি আছে। কিন্তু এ রকম নয়। আমরা সত্যিটা জানতে চাইছি।' এদিকে আজ অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে বলে জানায় সিবিআই। তবে সিবিআই জানায়, অভিজিৎ এবং সন্দীপের মধ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। সেদিন সারা দিন দু'জনের কথা হয়েছে। সেখানে সন্দীপই পুলিশ আধিকারিককে সব 'নির্দেশ' দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। সিবিআইয়ের কথায়, 'ঘটনার দিন সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে কথা হয়েছিল ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের, সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে।' এমনকী কাউকে আড়াল করা হয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সিবিআই। এছাড়া প্রমাণ লোপাটের বিষয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এবং এই গোটা ষড়যন্ত্রের অংশিদার হয়ে থাকতে পারেন অভিজিৎ মণ্ডল। (আরও পড়ুন: 'CM বাইরে ভিজেছেন…', 'অতি বাম চিকিৎসকদের' ওপর বিরক্ত সার্ভিস ডাক্তার ফোরাম)
আরও পড়ুন: নজরে পুলিশের 'ভুল', আরজি কর কাণ্ডে এক শীর্ষ কর্তাকে অনলাইনে জেরা CBI-এর: রিপোর্ট
এদিকে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিজিতের আইনজীবী পালটা যুক্তি দেন, 'কর্তব্যে গাফিলতির কথা বলা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিভাগীয় তদন্ত করা যেত। কিন্তু ওসি-কে নিয়ে সিবিআইয়ের কিছু বলার নেই।' আদালতে জানানো হয়, অভিজিৎ মণ্ডলকে ছ’বার নোটিস দেওয়া হয়েছে। শেষ বার ১৪ তারিখ পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি অভিযুক্ত না সাক্ষী সেটা নাকি তাঁকে জানানো হয়নি। এরই মাঝে নাকি তিনি নিজের শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়েছিলেন সিবিআইকে। পাশাপাশি তদন্তকারীদের হাতে বিভিন্ন নথিও তুলে দিয়েছিলেন। এদিকে অভিজিতের অ্যারেস্ট মেমো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী। অভিযোগ, কীসের ভিত্তিতে অভিজিৎকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তা দেখানো হয়নি মেমোতে। তাছাড়া নিয়ম অনুযায়ী ধৃতের কোনও আত্মীয়ের সই নেই মেমোতে। এদিকে আজ শিয়ালদা আদালতে টালার প্রাক্তন ওসির আইনজীবীকে সওয়াল করতে বাধা দেন আইনজীবীদের একাংশ। কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে অভিজিতের আইনজীবীকে বলা হয়, আগামী শুনানিতে যেন তিনি অভিজিতের হয়ে সওয়াল না করেন।