গ্রুপ–সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলকে। তার সঙ্গে এবার মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের যোগসূত্র পেল সিবিআই। সিবিআই –এর দাবি, চন্দন মণ্ডলের টাকা প্রসন্ন রায়ের মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে যেত। এমনকী চন্দনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঢুকত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের অ্যাকাউন্টে। এখনও পর্যন্ত ২২টি অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে বলে নজরে এসেছে। মাঝেমধ্যে হাতে হাতেও পৌঁছে দেওয়া হতো বিপুল নগদ টাকা।
এদিকে শুক্রবার চন্দন মণ্ডলকে নিজাম প্যালেসে গ্রেফতার করার পর তল্লাশি চালিয়ে তার পকেট থেকে উদ্ধার হয়েছে মাত্র ২০৩ টাকা। একটি সাধারণ ও সস্তার কি–প্যাড মোবাইল ফোন তিনি ব্যবহার করতেন। সেটাও মিলেছে তার পকেটে। কোটি টাকা লেনদেনে অভ্যস্ত রঞ্জন নিজেকে নিঃস্ব বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন সিবিআইয়ের দফতরে। এমনকী সিবিআইয়ের জেরায় রঞ্জন এসএসসি’র দুর্নীতির কোটি টাকার লেনদেন সম্পর্কে কোনও তথ্যই জানাতে চায়নি। তবে রঞ্জন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসের উপর খাপ্পা। চন্দন মণ্ডলের অভিযোগ, উপেন বিশ্বাস তাকে পরিকল্পনা করে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছেন, কয়েকজন প্রভাবশালীর সঙ্গে যোগাযোগের সুবাদে চন্দন মণ্ডল স্কুল দফতরে নিয়োগের নাম করে টাকা তুলতে থাকে। সিবিআই তথ্য পেয়েছে, উচ্চপর্যায়ের এজেন্ট ছিল এই চন্দন। সে আবার অজস্র সাব এজেন্ট রেখেছিল। তাদের দিয়েই বিভিন্ন জেলার চাকরিপ্রার্থীদের টাকা দিতে বলা হতো। টাকা দিলেই মিলবে চাকরি। ওএমআর শিটের উপর নাম লিখেই জমা দিলে কাজ হাসিল। আর কয়েকটি প্রশ্নে কালি দিয়ে ফাঁকা জায়গা ভরাট করিয়ে নেওয়া হতো। যাতে বোঝা যায় কারা টাকা দিয়েছেন। এই সব তথ্য পাওয়ার পরই রঞ্জনকে তলব করে সিবিআই। আর নিজাম প্যালেসে গ্রেফতার করা হয়।
রাতে দফায় দফায় তাকে জেরা করা হয়। সেখানে সে নানা বিষয় অস্বীকার করে। আর নিজের সম্পর্কে বলতে থাকে, অত্যন্ত সাধারণ পরিবারের সদস্য সে। জমিতে কৃষকের কাজ করে চলে তার। আর কিছু ছাত্রছাত্রীকে পড়িয়েই তাঁর সংসার চলে। যদিও ব্যাঙ্কের লেনদেন সে কথা বলছে না। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি খয়েরি রঙের চামড়ার বেল্ট, ২০৩ টাকা এবং একটি কি–প্যাড মোবাইল উদ্ধার করে। তবে সিবিআই মনে করছে, চন্দনের কাছে টাকা না থাকলেও নাম–বেনামে তার অনেক সম্পত্তি রয়েছে।