কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল সিবিআই। কারণ তাদের করা এফআইআর বহাল রাখলেও বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানিয়ে দিয়েছেন, রেলের জায়গার বাইরে সিবিআইকে তল্লাশি করতে হলে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের সমন পাঠিয়ে তলব এবং জেরা করার অনুমতি সিবিআইকে দিয়েছে হাইকোর্ট। সুতরাং সিবিআই চাইলেই যা খুশি করতে পারবে না। একপ্রকার তাদের বেধেই দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এই নির্দেশের ফলে কয়লা বা গরু পাচারে অভিযুক্তদের বাড়ি, অফিসে হানা দিতে সমস্যা হবে সিবিআইয়ের বলে মনে করছেন অনেকে। শুধু সমন পাঠানোর পরেও অভিযুক্তেরা হাজিরা না দিলে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করাতে পারবে। এমনকী হাইকোর্টের রায়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কয়লা পাচারের মামলায় এফআইআর আইনসঙ্গত। সেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না।
আদালতের নির্দেশের পর এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে তল্লাশি না করেও কী ভাবে সিবিআই তাদের জালে আটক করে এখন সেটাই দেখার। সূত্রের খবর, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার কথা ভাবছে সিবিআই। তবে তার প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি।
ইতিমধ্যেই গরু ও কয়লা পাচারের মামলায় তলব করা হয়েছে এই রাজ্যের একাধিক পুলিশকর্তাকে। তাঁদের কয়েকজন এই মামলায় সিবিআইয়ের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে পাল্টা মামলা করেছেন। এই মামলায় লালার তরফে সাবির আহমেদ, ফারুক রাজ্জাক–সহ সাতজন আইনজীবীর যুক্তি ছিল, রেলের এলাকা বলা হলেও তা আসলে রাজ্য সরকারের অধীনে। রাজ্যের দাবি, তাদের অনুমোদন ছাড়া তাদের এলাকার মধ্যে সিবিআই হানা দিতে পারে না। সিবিআইয়ের তদন্তের বিরোধিতা করে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, রেলের এলাকায় কোনও চুরি বা সম্পত্তি নষ্ট হলে তার তদন্তের দায়িত্ব আরপিএফের, সিবিআইয়ের নয়।
সিবিআইয়ের পক্ষে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর আদালতে যুক্তি দেন, রেলরক্ষী বাহিনী প্রথম পাচার হওয়া কয়লা ধরে এবং এফআইআর করে। এফআইআর হওয়ার পরবর্তীকালে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছে। আদালত দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে রেলের এলাকায় সিবিআইয়ের তদন্তের অধিকার আছে বলে জানিয়েছে।