কয়লা দুর্নীতি ও পাচারকাণ্ডে ফের রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিল সিবিআই। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতা ও পশ্চিম বর্ধমান–সহ একাধিক জায়গায় চলছে হানাদারি। সিবিআই সূত্রে খবর, জয়শ্রী গ্রুপ নামে এক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধার সিবিআইয়ের আতস কাঁচের তলায়। এই গোষ্ঠী লালার কাছ থেকে কয়লা কিনত বলে সিবিআইয়ের কাছে খবর। ইতিমধ্যে মূল অভিযুক্ত লালার খোঁজে রেড কর্নার নোটিস জারির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে জেরা করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই নিয়ে জলঘোলা হয় রাজ্য–রাজনীতিতে।
এই জয়শ্রী গ্রুপের কর্তা হলেন অমিত আগরওয়াল ওরফে সোনু। সিবিআই সূত্রে খবর, এই অমিতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কয়লাকাণ্ডের মাথা অনুপ মাজি ওরফে লালার। এই লালার কাছ থেকে সোনু তাঁর জয়শ্রী স্টিল প্ল্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেডের জন্য প্রচুর পরিমাণে কয়লা কিনতেন। এতে চড়া মুনাফা থাকত লালার। এই অমিত আগরওয়াল নামক ব্যবসায়ীর আয়রন ফ্যাক্টরি–সহ বেশকিছু ব্যবসা রয়েছে। লালার কয়লা পাচারের সঙ্গে সরাসরিভাবে যুক্ত এই ব্যক্তি।
এদিন কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি–সহ রাজ্যের পাঁচ এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে তদন্তকারী দল। কলকাতা ছাড়া আসানসোল, দুর্গাপুর, বরাকর–সহ মোট পাঁচটি এলাকায় তল্লাশি চলছে। দু’জন শিল্পপতির খোঁজে মূলত তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। ওই দুই শিল্পপতি কুলটির বরাকরের আদি বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের ঝাড়খণ্ড, দুর্গাপুর, কাঁকসা, বাঁকুড়ায় ১৩–১৪টি কারখানা রয়েছে। সূত্রের খবর, সেই লৌহ ইস্পাত কারখানা চালাতেই লালার কাছে থেকে ওই দুই শিল্পপতি কয়লা কিনত।
সিবিআই সূত্রে খবর, লালার গতিবিধিতে নজরদারি করতে গিয়েই হাতে উঠে আসে সোনুর নাম। সিবিআই খোঁজ করছিল, লালা যে বিপুল পরিমাণ কয়লা তুলতেন, তা কে বা কারা কিনতেন। তার খোঁজখবর করতেই উঠে আসে, সোনুর নাম। লালার কাছ থেকে কয়লা কিনে নিজের জয়শ্রী স্টিল প্রাইভেট লিমিটেডে ব্যবহার করতেন সোনু। এরপরই এদিনের অভিযান। এই সোনু ওরফে অমিত আগরওয়াল বছরে কত কয়লা কিনতেন, কত টাকায় কিনতেন, লালার সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে— এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে সিবিআই।