শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও সক্রিয় হল সিবিআই। এবার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তাপস সাহার প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালকে তলব করল সিবিআই। সূত্রের খবর, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল টাকা লেনদেন হয়েছে। আর তার হদিশ পেয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা। এই তথ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করেই তাঁকে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে। এমনকী সঙ্গে তাঁকে ব্যাঙ্কের নথিপত্রও আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে তাপস সাহাকে টানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা জেরা করা হয়েছিল তেহট্টের বাড়িতে। তারপর নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছিল। এবার একই জায়গায় প্রবীর কয়ালকে ডেকে পাঠানো হল।
কত টাকা লেনদেন হয়েছিল? শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তেহট্টে প্রবীর কয়ালের বাড়িতেও গিয়েছিলেন সিবিআই অফিসাররা। সেখান থেকে বহু নথি সংগ্রহ করেছিলেন। এবার তার সত্যাসত্য জানতে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, মাত্র দু’মাসে দু’কোটি টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে। সেই লেনদেনের কারণ জানতেই এবং টাকার খোঁজে সোমবার নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে তাঁকে। তাই ব্যাঙ্কের নথিপত্রও আনতে বলা হয়েছে। তাপস সাহার দুটি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সেখান থেকেও তাপস সাহার প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালের নানা তথ্য মিলেছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এদিকে যে টাকার লেনদেনের কথা সিবিআই জানতে চাইছে তা তাঁর এক ব্যবসায়ী বন্ধুর বলেও দাবি করেছেন প্রবীর কয়াল। তাঁর আরও দাবি, এমএলএ হস্টেলের ঠিক বিপরীতে একটি হোটেলে কাজ করেছিলেন তিনি। তখন তাঁর সঙ্গে তাপস সাহার যোগাযোগ হয়। পরে তিনি তাঁর পিএ হন। তবে তাপস সাহার সঙ্গে থাকার জন্য যে তাঁর ক্ষতি হবে সেটা তিনি বুঝতে পারেননি। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। অভিযোগ, একাদশ–দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা তাপস মারফত গিয়েছিল প্রবীরের কাছে। প্রবীরকে আগে গ্রেফতারও করেছিল রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা। এরপর মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে।
আর কী অভিযোগ উঠেছে? অন্যদিকে দমকল এবং স্বাস্থ্যদফতরের নানা পদে নিয়োগ করার জন্যও টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। রাজ্যের আবগারি দফতরে নিয়োগ করার নথি উদ্ধার করা হয় বিধায়ক তাপস সাহার প্রাক্তন আপ্তসহায়ক প্রবীর কয়ালের কাছ থেকে। এমনকী প্রবীরের হাওড়ার শ্যামপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় কৃষি দফতরের নথি। এই নথিগুলি এখন সিবিআইয়ের কাছে। সিবিআই প্রবীর কয়ালের ব্যাঙ্কের নথিপত্রও খতিয়ে দেখেছে। তাতেই দেখা গিয়েছে, দু’মাসে ২ কোটি টাকারও বেশি প্রবীরের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল।