কালীপুজো ও দীপাবলির প্রাক্কালে আবার সুখবর এল বাংলায়। বাংলা জুড়ে এখন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন চলছে। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অনশন, মিছিল, কর্মবিরতি থেকে শুরু করে দ্রোহের কার্নিভাল করেছেন তাঁরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নীরবে কাজ করে চলেছে। সেই পরিশ্রমের ফল এক এক করে মিলছে। বাংলার জনস্বাস্থ্য পরিষেবাকে বিরাট স্বীকৃতি দিল কেন্দ্রীয় সরকার। ‘ন্যাশলাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স স্ট্যান্ডার্ডস’ শংসাপত্র পেল বাংলা। সেখানে দেশের সবকটি রাজ্যকে পিছনে ফেলে এগিয়ে বাংলা। শুধুমাত্র দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ এবং চণ্ডিগড় বাংলার আগে আছে। বাংলার প্রায় ২৫ শতাংশ জনস্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র এই শংসাপত্র পেয়েছে।
একদিন আগেই প্যারিস থেকে এসেছে আন্তর্জাতিক পুরষ্কার। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। এমনকী বাংলার দুর্গাপুজো পর্যন্ত ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এবার পরিষেবার ব্যবস্থা, রোগীদের অধিকার, কত অর্থ খরচ করা হচ্ছে, সহায়তা পরিষেবা, ক্লিনিক্যাল কেয়ার, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাপনা এবং কত আয় হচ্ছে—সব দিক থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে এই আটটি ক্ষেত্র তুল্যমূল্য বিচার করে গুণমানের শংসাপত্র দেওয়া হয়। জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল, কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে বাংলার ১২,৮৫৯টি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৩.৬ শতাংশ কেন্দ্র এই শংসাপত্র পেয়েছে।
আরও পড়ুন: গোপনে পাচার হচ্ছিল নিষিদ্ধ আতসবাজি, ১১০০ কেজি নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত, ধৃত ২
একটা ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনা করছে। তৃণমূল কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে। কারণ জুনিয়র ডাক্তারদের ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গতকাল শনিবার ধর্মতলায় অনশন মঞ্চে অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিদি হিসাবে বলছি বলে ডাক্তারদের ভাই সম্বোধন করেছেন। সোমবার অচলাবস্থা কাটাতে বৈঠক ডেকেছেন। আর এই শংসাপত্র পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী বাংলার স্বাস্থ্য পরিষেবার এই সাফল্যের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সকলকে অভিনন্দন জানান। সকল স্বাস্থ্য পেশার দক্ষদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলা এই সাফল্য অর্জন করেছে বলে তাঁর মত।
আবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাংলায় সাফল্য অর্জন করেছে। সেটা এখন অনেক রাজ্যই করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেখানে নাগরিককে একটি পয়সাও খরচ করতে হয় না। অথচ চিকিৎসা পরিষেবা মেলে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতেও ভাল চিকিৎসা হয়। ভেলোর তাদের মধ্যে অন্যতম। সেখানেও এখন কাজ করছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। বাংলার বহু মানুষ এই কার্ড দিয়ে ওখানে চিকিৎসা করিয়ে সফল হয়েছেন। তবে এই শংসাপত্র পাওয়া ক্ষেত্রে দক্ষিণের ওই রাজ্যগুলিও বাংলার পিছনে আছে। অন্ধ্রপ্রদেশের ১৮.১ শতাংশ, তেলাঙ্গানার ১৪.৮ শতাংশ, তামিলনাড়ুর ১২.৬ শতাংশ এবং কর্নাটকের ৯.৫ শতাংশ স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র ‘ন্যাশলাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স স্ট্যান্ডার্ডস’ শংসাপত্র পেয়েছে।