একশো দিনের কাজ এখন বাংলায় বন্ধ। এই প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার জেরে বাংলার গ্রামীণ মানুষ ব্যাপকভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। এই জন্যই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যায়, ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই। বারবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল রাজ্যে এলেও কোনও লাভ হয়নি। এবার আবার নতুন পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার। একশো দিনের কাজে পরপর দু’টি অর্থবর্ষে বাংলাকে কোনও টাকা দেয়নি কেন্দ্র। অথচ তারই পর্যালোচনা বৈঠকে ডাকা হয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের অফিসারদের!
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সরকারি আমলা থেকে অফিসাররা হাসাহাসি শুরু করে দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এটা মোদী সরকারের এক ‘নির্মম রসিকতা’। এমনকী রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীর অভিযোগ, অর্থ আটকে রেখে বৈঠকে ডাকার পিছনে একটা পরিকল্পনা আছে। আর সেটা হল, অন্যান্য রাজ্যের কাছে বাংলাকে ছোট করে দেখানোর কৌশল। তার জন্যই এমন বৈঠক। তবে ওই বৈঠকে রাজ্যের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে বাংলাকে ধারাবাহিক বঞ্চনার কথাই তুলে ধরবেন। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার জেলায় জনসংযোগ যাত্রা থেকে মানুষের অধিকার ছিনিয়ে আনার বার্তা দিচ্ছেন। আর তার পরই এমন চিঠি পাঠিয়ে বৈঠক ডাকা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
কবে এই বৈঠক হবে? কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব শৈলেশকুমার সিং রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিব পি উলগানাথনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতে বৈঠকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে রাজ্যের অফিসারদের আগামী ১৮ এবং ১৯ মে নয়াদিল্লিতে পর্যালোচনা বৈঠকে ডাকা হয়েছে। এই বৈঠকে ‘১০০ দিনের কাজ’–এর পর্যালোচনার জন্য বেশিরভাগ সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। বৈঠকের প্রথম দিনে হবে এই নিয়ে আলোচনা।
ঠিক কী জানা যাচ্ছে নবান্ন থেকে? নবান্ন সূত্রে খবর, এই বৈঠকে অবশ্যই বাংলার মানুষের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হবে। বকেয়া অর্থ–সহ নতুন বরাদ্দ দ্রুত ছাড়ার দাবিও জানানো হবে। ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা প্রকল্প মিলিয়ে এখন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের পাওনা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা ছাড়ার বিষয়ে কোনও শব্দ খরচ করছে না মোদী সরকার। একাধিকবার চিঠি পাঠালেও কোনো উত্তর দিচ্ছে না। তাই বৈঠকে যখন সুযোগ পাওয়া যাবে তখন আসল চিত্র তুলে ধরা হবে। তাতে যদি গায়ে লাগে সেক্ষেত্রে কিছু করার নেই। কারণ এই দিনটি নিজেদের জন্যই তাঁদের দেখতে হবে।