সরকারি হাসপাতালে রোগী রেফারের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এই সমস্যা নিয়ে বহুবার স্বাস্থ্য অধিকারিক থেকে শুরু করে হাসপাতালগুলিকে ধমক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাছাড়া বহু পদক্ষেপও করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও রেফার রোগ বন্ধ হয়নি। এই অবস্থায় হাসপাতালগুলিতে রেফারের সমস্যা সমাধানে ‘সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম’ চালু করার কথা ঘোষণা আগেই করেছিল রাজ্য সরকার। গত অক্টোবরে একটি হাসপাতালে চালু হয়েছিল এই সিস্টেম। এবার চালু হল আরও পাঁচটি হাসপাতালে। শুক্রবার থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, এনআরএস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে এই রেফারেল সিস্টেম চালু হল। এই হাসপাতালগুলিকে ব্লক হাসপাতালগুলির সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত করা হয়েছে। তা থেকে সহজেই বোঝা যাবে কোন হাসপাতালে কত বেড খালি রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোগী না দেখেই রেফার, অধিকাংশই রাতে, স্বাস্থ্য দফতরের বৈঠকে উঠে এল তথ্য
রোগী রেফার নিয়ে যেমন চাপের মুখে পড়তে হয় চিকিৎসকদের, তেমনি অনেক সময় রোগী পরিবারের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। তবে সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেমের মাধ্যমে সেই চাপ কমানো যাবে বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে কোনও ব্লক বা জেলা হাসপাতাল থেকে বড় মেডিক্যাল কলেজ বা হাসপাতালে রোগী পাঠানো যাবে অনলাইনে তথ্য দেখে। অনলাইনে ব্লক বা জেলা হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা দেখে নিতে পারবেন যে সংশ্লিষ্ট বিভাগে কোন হাসপাতালে কতগুলি বেড ফাঁকা রয়েছে। সেই মতো তিনি রোগীদের রেফার করতে পারবেন। এমনকী অনলাইনে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সঙ্গে আলোচনা করে রোগীকে প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন দিতে পারবেন চিকিৎসক। তারপর রোগীকে নির্দিষ্ট হাসপাতালে রেফার করা হবে ব্লক বা জেলা হাসপাতাল থেকে। রোগীদের বেড নম্বর ব্লক বা জেলা হাসপাতাল থেকেই জানিয়ে দেওয়া হবে।
রেফারের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা বা ব্লক হাসপাতাল থেকে রোগীদের হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে দেওয়া হবে সেই চিরকুট নিয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে এমার্জেন্সিতে গেলেই চিকিৎসক ভর্তি নিয়ে নেবেন। ভর্তির ক্ষেত্রেও এরফলে জটিলতা কমবে।
প্রাথমিকভাবে গত অক্টোবর মাসে সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম পাইলট প্রজেক্ট শুরু হয়েছিল এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। আর এবার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজে চালু হল দ্রুতই এসম্পর্কিত ডিসপ্লে বোর্ড বসানো হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তাছাড়া, এই ব্যবস্থায় প্রভাবশালীর সাহায্যে সুবিধামতো বেড পাওয়ার প্রবণতাও কমবে।জানা যাচ্ছে, বাকি ২৩টি মেডিক্যাল কলেজে এই ব্যবস্থা চালু হবে আগামী ডিসেম্বর থেকে।