বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগ সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ প্রতিনিধি দল৷ শুক্রবার সকালে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করলেন তাঁরা৷ আজও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধি দলের৷ আজ শুরুতেই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা৷ তবে রাজ্যপালের সঙ্গে এই প্রতিনিধিদল দেখা করার আগে বালিগঞ্জে বিএসএফের সদর দফতরে যান বিজেপির প্রতিনিধি দল। এই দলে ছিলেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল, নন্দীগ্রামের সদ্য নির্বাচিত বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিদলকে প্রায় আড়াইশো পাতার রিপোর্ট এবং হিংসা প্রতিহিংসাপ্রবণ এলাকাগুলি সরজমিনে খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানান তাঁরা।
নির্বাচন পরবর্তী হিংসার যে খবর আসছে, তা খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট পাঠানোই এই প্রতিনিধি দলের প্রধান কাজ৷ বৃহস্পতিবার নবান্নে গিয়েছিলেন চার সদস্যের দল৷ সেখান মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং ডিজিপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা৷ আজ কেন্দ্রীয় দল পৌঁছে যায় রাজভবনে৷ সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন তাঁরা৷ এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব গোবিন্দ মোহন৷ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসায় যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দফতরে৷ তাই বিভিন্ন উপদ্রুত এলাকায় যাচ্ছেন চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দল৷ রাজভবন থেকে বেরিয়ে দক্ষিণবঙ্গের জেলার উদ্দেশ্যে রওনাও হয়ে যান তাঁরা৷
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি নেতারা জানান, ২১ জন আমাদের মারা গিয়েছে। হিংসা চলছে আর সরকার বলছে থেমে গিয়েছে। সেটা ঠিক নয়। মেদিনীপুরে আমাদের তিনজন কর্মীকে কোপানো হয়েছে। একজন মারা গেছেন। মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওপর হামলা করা হয়েছে। একাধিক জায়গা থেকে হিংসার খবর আসছে। ভয়ের পরিবেশে মানুষ পালিয়ে গিয়ে অন্য বাড়িতে বা জঙ্গলে আছেন সেটা আমরা দেখে আসবার অনুরোধ জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের কাছেও রিপোর্ট তলব করা হয়েছে৷ ওই মেদিনীপুরে আক্রান্ত হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী৷ ভাঙচুর চালানো হয় তাঁর গাড়িতে৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেও ফের চড়তে থাকে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ৷ এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর৷ রাজ্যপাল ও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছ থেকে রিপোর্ট পেয়ে কেন্দ্র কী ব্যবস্থা নেয় সেটাই দেখার।