এতদিন তৃণমূলের ২১শে জুলাইয়ের সভা মানেই ছিল কবচি ডুবিয়ে ডিম-ভাত খাওয়া। অনেকে লেখেন ডিম্ভাত। শহিদ মিনারের চারদিকে বসত এই ডিম্ভাতের আসর। তবে সেই তৃণমূল এখন অনেকটাই পরিণত। এখন তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা হেলিকপ্টারে চেপে সভায় যান। সেই ২১শের সমাবেশে এবার তৃণমূল কর্মীদের জন্য ডিম ভাত ছিল এমন সর্বত্র নয়। এবার তৃণমূল কর্মীদের পাতে পড়ল চিকেন। দূর জেলা থেকে বাসে চেপে সভাস্থলে আসার পথে রাস্তার ধারেই জমিয়ে চিকেন ভাত খেলেন তৃণমূল কর্মীরা। সেই সঙ্গেই শেষ পাতে ছিল চাটনি।
কলকাতার রাজপথের পাশেই জমিয়ে চলল রান্নাবান্না। এমনতিই এদিন ছিল ছুটির কলকাতা। রাস্তাঘাট কিছুটা ফাঁকা থাকে ছুটির দিন। দোকানপাটেও সেভাবে ভিড় থাকে না। পুজোর মরসুম শুরু হয়নি এখনও। সেই পরিস্থিতিতে ২১শের সমাবেশের জন্য এদিন হাজার হাজার তৃণমূল কর্মী কলকাতায় এসেছিলেন।
গত কয়েকদিন ধরেই স্রোতের মতো তৃণমূল কর্মীরা আসছিলেন কলকাতায়। তাঁদের থাকা খাওয়ার জন্য নানা জায়গায় ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই এটা কার্যত রীতি হয়ে গিয়েছে। একটা সময় ছিল যখন ক্ষমতায় ছিল না তৃণমূল। সেই সময় বেশ কষ্ট করেই সভায় আসতেন তৃণমূল কর্মীরা। পরবর্তী সময় ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তারপর থেকেই রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের দাপট ক্রমশ বাড়তে থাকে।
এখন তৃণমূলের ক্ষমতা চোখে পড়ার মতো। বহু নেতার প্রতিপত্তিও নজর কাড়ে। বাড়ি, গাড়ি একেবারে এলাহি ব্যাপার। এদিকে এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতার দম্ভ কমানোর জন্য, বড় গাড়ি ছেড়ে স্কুটার সাইকেল ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন মমতা নিজেই।
সেই পরিস্থিতিতে এবারের ২১শে সমাবেশ দেখা গেল একটু অন্যরকম। এসি গাড়িতে চেপে এলেন নেতারা। তবে কর্মীদের বেশিরভাগই পায়ে হেঁটে এসেছিলেন সভায়। বৃষ্টির মধ্য়েও তাঁরা ঠায় বসেছিলেন সভাস্থলে। বৃষ্টিতে ভিজেও সভাস্থলে ছিলেন তাঁরা।
এদিন খণ্ডঘোষ থেকে আসা তৃণমূল কর্মীদের একটি টিমকে দেখা গিয়েছিল কলকাতার রাস্তার পাশে মাংস ভাত রান্না করতে। একেবারে পুরোদমে পিকনিকের মেজাজ। সেই পিকনিকের মেজাজে দিনটা কাটালেন তাঁরা। সবাই মিলে পাত পেড়ে মাংস ভাত খাওয়া। সেই সঙ্গে চাটনিও ছিল।
তবে এটা কেবল কর্মীদের। নেতাদের অনেকেই এদিন খেলেন কলকাতা শহরের বড় রেস্তরাঁতে। কর্মীদের সঙ্গে একপাতে বসে খাওয়ার বিষয়টি তাঁদের আর বিশেষ পছন্দের নয়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় অবশ্য় নিজে সতর্ক করে দিয়েছেন দলের অন্দরে যারা নিজেদের কেউকেটা ভাবছেন তাঁদেরকে।