লাগাম ছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আলু, শাক-সবজি থেকে চিকেন, আলোচনায় উঠে এল সব কিছু। দাম নিয়ন্ত্রণে কিছু ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু ক্ষেত্রে দিলেন বিকল্প পরামর্শ।
আলোচনায় দাম বৃদ্ধির কারণ হিসাবে জ্বালানির দামের দিকেই আঙুল তোলেন তিনি। মমতা বললে, 'জ্বালানির দাম অনেকটা বেড়েছে। তাই মাল নিয়ে আসা-যাওয়ার খরচ বেড়েছে, দাম তো কিছুটা বাড়বেই।' তবে দেশের অন্যান্য বাজারের তুলনায় বাংলার বাজার অনেকেটা স্থীতিশীল বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গক্রমে আলুর দাম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন দাম কমাতে গেলে হিমঘর থেকে আলু বার করতে হবে। তবেই দাম অনেকটা কমবে। সে ক্ষেত্রে তিনি প্রস্তাব দেন হিমঘর থেকে যদি ৫০শতাংশ আলু বার করা হয় তবে সরকার যে শুল্ক নেয় তা ছেড়ে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রস্তাব আসে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত যদি ১০০ শতাংশ আলু হিমঘর থেকে বার করা হয় তবে যাতে সরকার শুল্ক না নেয়। মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রস্তাব মেনে নেন।
সোমবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আলোচনা করেন আধিকারিকের দেওয়া শাকসবজির পাইকারি দামের তালিকা ধরে ধরে। তিনি জানতে চান ফুলকপি দাম ও বাঁধাকপির দামের বৃদ্ধি নিয়ে। তবে শীতের সবজি আরও উঠলে বাজারে যে দাম কমবে সে ব্যাপারে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তালিকা পড়তে গিয়ে তিনি থমকে যান পালং শাকের দামে। দাম এত বেশি কেন পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে জানতে চান। পরে তিনি বিকল্প হিসাবে পরামর্শ দেন পালংশাকের পাশাপাশি অন্যান্য শাক বাজারে আনতে। তিনি বলেন, 'বাংলায় তো আরও অনেক শাক আছে সেগুলি কৃষকদের কাছ থেকে নিন। বাজারে আনুন। মানুষকে জানান।'
মুখ্যমন্ত্রী চিকেনের দাম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, 'চিকেনের দাম এত বাড়ছে কেন? ওটা কমাতে হবে। চিকিনের দাম ১৫০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে।'
বিক্রেতারা জানান, মুরগির খাবারের দাম অনেকটাই বেড়েছে। তাই মুরগি পালনেও খরচ বেড়েছে। সে কারণে দাম কমছে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'মুরগির খাবার কেন বাইরে থেকে আনতে হবে। রাজ্যে খাবার তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের নিয়ে কমিটি তৈরি করা হোক।'
রাজ্যে সর্বত্র যাতে সবজি বোঝাই গাড়ি যাতে সহজে চলাচল করতে পারে তার জন্য আলাদা করে তার জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। রাস্তা বন্ধ থাকলে ঘুরপথে গাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে নির্দেশ দেন তিনি। তবে সেই সবজির ভিতর কেউ অন্য কিছু নিয়ে না যেতে পারে তার জন্য পুলিশকে নাকা চেকিং-ও করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।