শনিবার সন্ধ্যায় রুদ্ধশ্বাস অভিযানে সিআইএসএফের ঘাতক জওয়ান অক্ষয়কুমার মিশ্রকে নিরস্ত্র করেছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী। যার জেরে বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ওই জওয়ান ছুটি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই গুলি চালিয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় কলকাতা পুলিশের গাড়িতে বসে রীতিমতো হাত নাড়তে দেখা যায় অভিযুক্ত জওয়ানকে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সিআইএসএফের এক আধিকারিকের আহত হয়েছেন আরেকজন।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় গুলি চালানোর খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় লালবাজারের বিশেষ বাহিনী। পৌঁছন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ঘটনাস্থলেই অপারেশনের রূপরেখা ঠিক করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, আক্রমণাত্মক না হয়ে জওয়ানকে বুঝিয়ে আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা হবে। সেই মতো অক্ষয়কুমার মিশ্রকে মোবাইল ফোনে বোঝাতে শুরু করেন তাঁর সহকর্মীরা। তখন ঘাতক জওয়ান আশঙ্কা প্রকাশ করেন, তাঁকে গুলি করা হতে পারে।
কেন গুলি চালালেন? পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডে পুলিশের কাছে বিস্ফোরক দাবি ধৃত জওয়ানের
ওদিকে ততক্ষণে গোটা জাদুঘর চত্বরে তল্লাশি শুরু করেছে দিয়েছে কলকাতা পুলিশের বাহিনী। শেষে সিআইএসএফ ব্যারাকের একটি ঘরে ওই জওয়ানের খোঁজ মেলে। তখনও হাতে একে ৪৭ নিয়ে বসে তিনি। জওয়ানের খোঁজ পেয়ে তাঁকে গুলি করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেন কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনীর আধিকারিকরা। তার পরেও ওই জওয়ান গুলি চালাতে পারেন এই আশঙ্কায় গোটা ঘর ঘিরে ফেলেন কম্যান্ডোরা। এর পর বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরে নিরস্ত্র হয়ে ঘরে ঢোকেন এক আধিকারিক। তাঁর হাতেই নিজের একে ৪৭টি তুলে দেয় ঘাতক জওয়ান।
‘জওয়ানদের কাউন্সেলিং করানো উচিত কেন্দ্রের’, কেন্দ্রকে পরামর্শ বিজেপি বিধায়কের
এর পর অভিযুক্ত অক্ষয়কুমার মিশ্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে কলকাতা পুলিশের গাড়িতে চড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। গাড়ি করে জাদুঘর চত্বর থেকে বেরনোর সময় রীতিমতো হাত নাড়তে দেখা যায় অভিযুক্ত জওয়ানকে।
জেরায় অভিযুক্ত হেড কন্সটেবল জানিয়েছেন, গত দু’মাস ধরে ঊর্ধ্বতন অফিসারের হাতে হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন। সিআইএসএফের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার সুবীর ঘোষ নিয়মিত উত্ত্যক্ত এবং মানসিক নির্যাতন করতেন। আর সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই গুলি চালাতে হয়েছে। শনিবার ভরসন্ধ্যেবেলা ভারতীয় জাদুঘরে সিআইএসএফের ব্যারাকে একে–৪৭ রাইফেল থেকে পরপর ১৫ রাউন্ড গুলি চলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এএসআই রঞ্জিতকুমার সারেঙ্গির, আহত হয়েছেন ডেপুটি কম্যান্ডান্ট সুবীর ঘোষ।