তৃণমূলের মিটিংয়ে মারপিট, তারপর হাসপাতালে ভর্তি, ফের মিটিং শুরু। এটা গত কয়েকবছর ধরে অতি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সাধারণত সিপিএমের মিটিংয়ে এই ধরনের মারপিট হলেও তার কথা প্রকাশ্য়ে আসে না। তবে সেই ব্যতিক্রমী ঘটনাই হয়েছিল টালিগঞ্জে। টালিগঞ্জে সিপিএমের সম্মেলনে তুমুল মারপিট হয়েছিল। গত শনিবার সিপিএমের টালিগঞ্জ-২ এরিয়া কমিটির সম্মেলনে দলেরই দুই গোষ্ঠীর মারপিটের ভিডিয়ো একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে। এরপরই এনিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। তবে কি তৃণমূলের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে সিপিএমের শরীরে? মারপিট হওয়ার ভিডিয়ো বাইরে এল কীভাবে?
এবার এই ঘটনায় বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটি। মঙ্গলবার সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হয়েছিল। সেখানে এই মারপিটের প্রসঙ্গ ওঠে। সেখানে প্রশ্ন ওঠে টালিগঞ্জে সম্মেলনের মধ্য়ে কীভাবে মারপিট হল? আর মারপিট হওয়ার পরে সেই ভিডিয়ো বাইরে এল কীভাবে?
আসলে এখন মানুষের হাতে হাতে মোবাইল। কে যে কখন কোনটার ভিডিয়ো করে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে তা নিয়ে নানা সময়ে নানা বিতর্ক ওঠে। তবে সিপিএমের অন্দরের খবর বাইরে আসাটা এতদিন ছিল যথেষ্ট দুঃসাধ্য। আর এবার একেবারে ভিডিয়ো চলে এসেছে বাইরে।
আপাতত এক সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করেছে সিপিএম। সেখানে দেবাঞ্জন চক্রবর্তী রয়েছেন সেই কমিটিতে। তিনি দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন। তারপর তিনি রিপোর্ট তুলে দেবেন।
এদিকে ক্ষমতায় থাকাকালীন বিষয়টি অন্য়রকম ছিল। বর্তমানে সিপিএম যদি দলের অভ্যন্তরে কাউকে সতর্ক করতে যায় তাহলে তার তৃণমূলে নাম লেখানোর দরজা কার্যত পাকা হয়ে যায়। সেকারণে সব বুঝেও কার্যত এখন না দেখার ভান করেন সিপিএমের অনেকেই।
সূত্রের খবর, সেদিন টালিগঞ্জে স্থানীয় দুই সিপিএম নেতা রিভু আর টুবাইয়ের মধ্যেই সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তারপর তা হাতাহাতিতে পৌঁছে যায়। একেবারে মঞ্চের কাছে মারপিট শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই ভিডিয়ো কিছুটা দূর থেকে কেউ ভিডিয়ো করেছিলেন। সেটা ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সিপিএমের অন্দরে এখন নানা সংকট। মূল সংকটটা হল দলকে ধরে রাখা। একে তো পাড়ায় পাড়ায় কর্মী পাওয়া যায় না। তার উপর যদি স্থানীয় স্তরের কর্মীদের মারপিট করার জন্য শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। আরও শূন্য হয়ে যেতে পারে সিপিএম।