আগুন কেড়ে নিয়েছে সব কিছু। কার্যত সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন নারকেলডাঙার ঝুপড়ির বাসিন্দা। শনিবার রাতে আচমকা দাউ দাউ করে জ্বলে গিয়েছিল একের পর এক ঝুপড়ি। আগুন নিভে গিয়েছে। কিন্তু মনের মধ্য়ে জমে থাকা ক্ষোভের আগুন এবার ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমশ। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা সরাসরি তৃণমূলের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ করেছেন।
আগুনে এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, কাউন্সিলর কোনও কাজ করে না। বিপদে পাশে এসে দাঁড়ান না। স্থানীয়দের একাংশ বলেন, কাউন্সিলর ও তার লোকজন প্রতি দোকান থেকে তোলাবাজি করেন। এখানে গুদাম না করার জন্য় বার বার বলেছিলাম। কিন্তু ওরা শোনেনি।
স্থানীয় কাউন্সিলর সচিন সিংহ বলেন, আমি কাউন্সিলর হওয়ার পর যাদের দুর্নীতি বন্ধ করেছি সেকারণে ওদের ক্ষোভ রয়েছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম রবিবার এলাকায় গিয়েছিলেন। আর মেয়র চলে যেতেই তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কাউন্সিলরদের অনুগামীদের সংঘর্ষ মারাত্মক আকার নেয়। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি স্থানীয় কাউন্সিলর ও তার অনুগামীরা এলাকায় তোলাবাজি করে।
এদিকে মেয়র এদিন এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নানাভাবে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে। তবে মেয়র চলে যেতেই শুরু হয়ে যায় মারপিট। নারকেলডাঙা থানার কাছে পুলিশের সামনে শুরু হয়ে যায় সংঘর্ষ।
মেয়র বলেন, ইরিগেশনের জায়গায় এরা অনেক দিন ধরে ওরা ছিলেন। গরীব মানুষের সাথে আমরা আছি। ওদের বলেছি সরকারি ভাবে যা করার করব। আইনত যা হবে ন্যায্য হবে তা করব। এখানে ইরিগেশন জায়গা দিলে আমরা সহায়তা করব। বাংলার বাড়ি তৈরি হতে পারে। তবে কাউন্সিলর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব রাজনীতি নিয়ে আমি কিছু বলব না।
এদিকে সংঘর্ষের পরে দেখা যায় যে কাউন্সিলর থানার সামনে বসে পড়েছেন। তিনি দাবি করেন, আমায় খুন করা হতে পারে। তবে পরে কাউন্সিলর গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে আগুনে বহু মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এই ঝুপড়ির মধ্য়ে একাধিক ছাত্রছাত্রী ছিল। তাদের গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত শনিবার রাতে নারকেলডাঙার বস্তিতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে একাধিক ঝুপড়ি। সেই অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ের। মৃতের নাম হাবিবুল্লা মোল্লা, বয়স ৫৫ বছর। তাঁর মৃতদেহ রবিবার সকালে উদ্ধার করা হয় একটি অগ্নিদগ্ধ ঝুপড়ির ভিতর থেকে। মৃতেহ দেহের সিংহভাগই পুড়ে গিয়েছিল।