কেউ এনেছেন জল, কেউ এনেছেন খাবার, কেউ এনেছেন ওআরএস, কেউ এনেছেন বিস্কুট- স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়াতে এভাবেই এগিয়ে এলেন সাধারণ মানুষ। সকলের বাড়ি যে কাছে, তা মোটেও নয়। বরং কেউ গড়িয়ার বাসিন্দা, কেউ থাকেন মুকুন্দপুরে। কেউ আবার কলেজ স্কোয়ার, সিঁথির বাসিন্দা। কিন্তু প্রত্যেকে একটা দাবিতেই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে থাকতে এসেছেন, সেটা হল ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’। ‘দিদি’, 'বোন', 'মেয়ের' জন্য তাঁরা বিচার চাইতে এসেছেন। পেশাগত দায়বদ্ধতার তাঁরা হয়ত একটানা আন্দোলনে থাকতে পারছেন না। কিন্তু যাঁরা লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা দিচ্ছেন যে ‘আমরা সবাই এক, আমাদের সকলের একটাই দাবি - বিচার চাই।’
‘দাদা-দিদিদের’ পাশে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া
তেমনই একজন হল পঞ্চম শ্রেণির এক পড়ুয়া। মঙ্গলবার রাতে মায়ের সঙ্গে স্বাস্থ্য ভবনে সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে চলে আসে। মা'কে বলেছিল যে দাদা-দিদিদের জন্য খাবার নিয়ে যেতে চায়। সেইমতো রাতে ব্যাগে করে খাবার দিতে থাকে সেই খুদে।
খাবারের বন্দোবস্ত করেন রাজারহাটের মানুষরা
রাজাহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকেও সাধারণ মানুষ এসেছেন। যাঁর যেমন সামর্থ্য, সেরকমভাবে খাবার এনেছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের রাতের খাবারের বন্দোবস্ত করেছেন। আর তাতে আপ্লুত হয়ে গিয়েছেন রেডিয়ো জকি অগ্নিও। তিনি বলেন, ‘রাজারহাটের গ্রামের মানুষজন। নিজেদের গরজে, নিজেদের খরচে আমাদের (জুনিয়র ডাক্তার ও সাধারণ মানুষের) ডিনারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।উৎসবেই তো আছি। মানুষের উৎসব।’
খাবার এসেছে SSKM ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও
সল্টলেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ক্যাম্পাস আছে, সেখান থেকে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের খাবার এসেছে। বার্তা দেওয়া হয়েছে যে ‘পাশে আছে যাদবপুর’। এক পড়ুয়া বলেন, ‘যাদবপুর ক্যাম্পাসে দুপুর থেকেই রান্না করা হচ্ছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে যতটা দাঁড়ানো যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। এই আন্দোলনটা যেন থেমে না যায়।’ একইভাবে এসএসকেএম হাসপাতালের ক্যান্টিনের খাবারও এসেছে স্বাস্থ্য ভবনের অবস্থানে।
পাশে অনলাইন ডেলিভারি এজেন্টরাও
আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনলাইন ডেলিভারি এজেন্টরাও। সোমবার রাতে কয়েকজন মিলে জুনিয়র ডাক্তারদের জল, বিস্কুট দিয়ে গিয়েছেন। প্যাকেটের পরে প্যাকেট জলের বোতল দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এই আন্দোলনটা চালিয়ে যেতে হবে। তাঁরা জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে আছেন। আবার এক ব্যক্তি নিজের দোকান থেকে বিনামূল্যে জলের বোতল বিতরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন এক আন্দোলনকারী।