নবম শ্রেণির ছাত্রী নিখোঁজ। দক্ষিণ কলকাতার নামী বেসরকারি স্কুলে পড়ে। বাড়ি নেতাজিনগরে। কিন্তু ওই ছাত্রী এখন বেপাত্তা বলে খবর। স্কুলের সামনে পুলকার থেকে নামার পর থেকেই তার আর কোনও হদিস মিলছে না। প্রেমের জোয়ারে পালিয়ে গেল, নাকি অপহরণ করা হয়েছে। সেটা নিয়ে এখন এলাকাজুড়ে চর্চা তুঙ্গে। নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী নেতাজিনগর থানার লায়েলকা এলাকার বাসিন্দা। মেয়ের সন্ধান না পেয়ে পাটুলি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে মিসিং ডায়েরি পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে পুলিশ কর্মীরা সেখানে পৌঁছয়। আর মোবাইলটি হাতে মেলে। তবে যেখান থেকে মোবাইল মিলেছে বা ট্র্যাক লোকেশন দেখে পুলিশ পৌঁছে সেই জায়গাটি হল কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন। ওই ছাত্রীর স্মার্টফোন পুলিশ হাতে পেলেও ছাত্রীর নাগাল এখনও মেলেনি। এটা নিয়েই এখন দানা বেঁধেছে রহস্য। পুলিশ সূত্রে খবর, এক তরুণের সঙ্গে দমদমগামী মেট্রো ধরতে দেখা গিয়েছে ওই ছাত্রীকে। তাহলে কি ভালবাসার টানেই ঘর ছাড়ল ছাত্রীটি? উঠছে প্রশ্ন।
আর কী জানা যাচ্ছে? মেয়ে নিখোঁজ। এই কথাটি পরিবার জানতে পারে স্কুল ছুটির সময়। ছাত্রীর বাবাকে ফোন করে পুলকার চালক এই খবর দেয়। তখনই ছাত্রীর বাবা থানার দ্বারস্থ হন। আর ছাত্রীর বাবা সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘সকাল সওয়া ন’টা থেকে স্কুল শুরু হয় মেয়ের। নবম শ্রেণিতে পড়ে। রোজ সকাল সওয়া ৮টায় বাড়ির সামনে পুলকার আসে। তাতে উঠে স্কুলের দিকে রওনা হয়েছিল। স্কুলে গিয়েই নামে। কিন্তু ভিতরে ঢোকেনি। সেটা আমরা জানতাম না। দুপুর ৩টে নাগাদ নির্ধারিত সময়ে স্কুল ছুটি হয়। ওই ছাত্রীকে দেখতে না পেয়ে পুলকার চালক স্কুলে গিয়ে খোঁজ নেন। স্কুল তাঁকে জানায়, ওই ছাত্রী আজ স্কুলেই আসেনি!’
তারপর ঠিক কী ঘটল? পুলকার চালক এই কথা শুনে ছাত্রীর বাবাকে ফোন করে বিস্তারিত জানান। মেয়ের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও কেউ তোলেনি। গল্ফগ্রীণ থানায় গোটা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানান তিনি। ফোন লোকেশন ট্র্যাক করে দেখা যায়, সেটি রয়েছে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনের পাশে। পুলিশ গিয়ে স্মার্টফোনটি উদ্ধার করে। তারপর মেট্রো স্টেশন ও সংলগ্ন রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। তখনই পুলিশ দেখতে পায়, এক তরুণের সঙ্গে ঘোরাফেরা করছে ওই ছাত্রী। আর ওই ছেলেটির সঙ্গেই দমদমের উদ্দেশে মেট্রো ধরে। এখন কবি সুভাষ থেকে দমদম পর্যন্ত সমস্ত মেট্রো স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।