আমরণ অনশনের সপ্তদশ দিনে কি জট কাটবে? আজ নবান্নে বৈঠক করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জুনিয়র ডাক্তাররা। মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিয়েছিলেন যে অনশন তোলার পরে যেন বৈঠকে আসেন তাঁরা। যদিও সেটা করা হয়নি। তারইমধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ জন প্রতিনিধিকে আসতে বলা হয়েছিল। তবে ১৭ জন জুনিয়র ডাক্তার এসেছেন। তাঁদের সবাইকেই বৈঠকে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ও জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের লাইভ আপডেট
— কিছুটা চমক দিয়েই আজ নবান্নের বৈঠকের লাইভস্ট্রিমিং হচ্ছে। আগের কয়েক দফার বৈঠকে লাইভস্ট্রিমিং নিয়ে তুমুল সংঘাত হয়েছিল। আজকের বৈঠকে ‘মেঘ না চাইতেই জল’-র মতো লাইভস্ট্রিমিং করা হচ্ছে।
— মুখ্যমন্ত্রী: আশা করছি যে আমার ভাইবোনেরা শারীরিকভাবে ভালো আছে। এবার যে সময় মেনে এসেছো, সেটা ভালো ব্যাপার।
— মুখ্যমন্ত্রী: আশা করছি যে আপনারা ডিমান্ড বাড়াবেন না। প্রতিদিন ডিমান্ড বাড়ালে আমাদের অসুবিধা হয়।
— আসফাকুল্লা নাইয়া: প্রতিবার আমরা দেরি করে আসি বলে একটা অভিযোগ আছে। কিন্তু প্রতিবার যোগাযোগাটা দেরিতে হয়। তাই আমাদের আসতে একটু দেরি হয়। এবার সেটা হয়নি বলে আমাদের আসতে দেরি হয়নি। আর অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের শারীরিক অবস্থা খুব ভালো নেই। তবে তাঁরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
— নবান্নের বৈঠক থেকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ এবং থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত আশিস পান্ডের নাম নেন দেবাশিস হালদার। তাতে আপত্তি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, যাঁরা এখানে নেই, তাঁদের নাম নেওয়া উচিত নয়। যে বিষয়টা বলতে চান, সেটা যেন বলেন ডাক্তাররা। তাতে দেবাশিস পালটা বলেন যে তাঁদের কয়েকজনের নামে অভিযোগ আছে। সেক্ষেত্রে কী করবেন? মুখ্যমন্ত্রী পালটা বলেন, অভিযোগ তো অনেকের বিরুদ্ধেই আছে।
— কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘গত ১৪ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় যাঁরা অভিযুক্ত ছিলেন, তাঁদেরকেও ছেড়ে দেওয়া হল। এই বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাইছি।’ পালটা মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে এটা কি নতুন দাবি নাকি? তখন ডাক্তাররা জানান যে এটা স্রেফ বলছেন।
— অনিকেত মাহাতো: আমি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের পিজিটি। আমি জানতাম না যে কলেজে এরকম অপরাধ চক্র চলছে।
— অনিকেত দাবি করেন যে এমন একটা কমিটি থাকা দরকার, যে কমিটি নিরপেক্ষ হবে। আর কারও অভিযোগ থাকলে তাঁরা সেখানে গিয়ে নিদেনপক্ষে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
— নবান্নের বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে অপসারণের দাবি তুললেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেইসময় অভিযুক্ত আর দোষীর মধ্যে পার্থক্য বোঝালেন এক যুবতী।
— মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, উত্তরবঙ্গে চাপ তৈরি করে পদত্যাগ করানো হয়েছে। সেটাও তো একধরনের থ্রেট কালচার।
— মুখ্যমন্ত্রী: তোমাদের একার দোষ দেব না। আমাদেরও হয়ত কোনও ভুল ছিল। কোনও ত্রুটি ছিল। যার জন্য তোমাদের এই জায়গাটায় যেতে হয়েছে।
— আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত উষ্মাপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দাবি করলেন, আপনি নিজেই ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করে দিলেন? আপনি স্বাস্থ্য দফতরকে সেটার প্রস্তাব পাঠালেন না কেন? সেখান থেকে আমি সিদ্ধান্ত নিতাম। এটা থ্রেট কালচার নয়?
— মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কার্যত সরাসরি সংঘাতে জড়ালেন অনিকেত মাহাতো। তিনি দাবি করেন, তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি আরজি করের প্রিন্সিপালের হয়ে মুখ খোলেন।
— আমরা দুটি বিষয় শুধু করতে পারব না। আমাদের হাত বাঁধা আছে। প্রথমত, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার বিচার চলছে সুপ্রিম কোর্টে। দ্বিতীয়ত, মেডিক্যাল কাউন্সিল নিয়ে সরকার যখন-তখন পরিবর্তন করতে পারে না।
— মুখ্যমন্ত্রী: আমি ২৬ দিন অনশন করেছিলাম। আমার কাছে সরকারের একজনও সরকারি আধিকারিক আসেননি। আমি নিজে গিয়েছি ধরনাস্থলে। মুখ্যসচিবদের পাঠিয়েছি। প্রতিদিন আমরণ অনশনরত চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। ঘণ্টায়-ঘণ্টায় খোঁজ নিয়েছি।
— মুখ্যমন্ত্রী: তোমরা বাইরে থাকলে আমরা বাড়িতে শুয়ে ঘুমোতে পারব না। দয়া করে তোমরা অনশন তুলে নাও।
— বৈঠক শেষ হল।