এবার ফের কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি থেকে শুরু করে ১০০ দিনের টাকা–সহ বিভিন্ন ইস্যুতে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি’র নামে ভোটারদের বাদ দেওয়ার চক্রান্ত হচ্ছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটার তালিকায় সকলের নাম আছে কি না, থাকলে নামের বানান ঠিক আছে কি না, সব দেখে নিতে বলে নাগরিকদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর বুধবার এই ইস্যুতে সোচ্চার হলেন তিনি।
এনআরসি নিয়ে কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? একদিকে নিজেদের ভোটার তালিকা পরীক্ষা করতে বলেছেন। আর অন্যদিকে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে বলেছেন। এনআরসি নিয়ে তিনি আজ বলেন, ‘কত মানুষ বাংলাদেশ থেকে সবকিছু হারিয়ে এখানে এসেছেন। ১৯৭১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত চুক্তি আছে সরকারের সঙ্গে যে তাঁরা ভারতের নাগরিক। ভাঁওতা দিয়ে তাদের ভারতের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়। আমার ভোটে তুমি প্রধানমন্ত্রী, আর মন্ত্রিত্ব পেয়ে তুমি বলছো তোমায় নাগরিকত্ব দেব। এর মানে কী? এটা অসম্মান করা। যারা রিক্সা চালান, যারা দোকান চালান, আরও অনেকে আছেন যাদের রেশন, আধার সব কার্ড আছে। এনআরসির নাম করে যেন কেটে দিতে না পারে। দেখে আসবেন। তাই ভোটার লিস্টে নিজেদের নাম তুলুন। নয়ত বলে দেবে আপনি এনআরসি। অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। ছিনিয়ে নিতে হবে।’
আর কী বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী? আজ, বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারের জমির পাট্টা বিলি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি জানান, রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। সেটা ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা চলবে। এই বিষয়ে নাগরিকদের তিনি বার্তা দেন, ‘এনআরসির নাম করে আপনাদের নাম কোথাও কেউ কেটে না দিতে পারে সেটা লক্ষ্য রাখবেন। তাই এখন থেকে নিজে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের নাম তুলে আসবেন। দেখে আসবেন নামটা আছে কি না। বাংলার সমস্ত মানুষকে বলছি, নিজেরা নিজেদের স্বার্থে নিজেদের নাম তুলুন। একটু কষ্ট করে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কাজ সেরে আসুন। না হলে কাল বলে দেবে, আপনার নাগরিক অধিকার নেই।’
পাট্টা দেওয়া নিয়ে কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? আজ গরিব মানুষের সরকারের তরফে পাট্টা বিলি করা হয়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা থাকলে আমি আছি। আমি বলব যত উদবাস্তু কলোনি আমরা চিহ্নিত করেছি তাঁদের সকলকে পাট্টা দিতে হবে। কৃষিজ, বনভূমি পাট্টা আরও বাড়াতে হবে। আমি ভেদাভেদ পছন্দ করি না। আজ পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে সব ধর্মের ভাইবোনরা ছিলেন। চা–বাগানের শ্রমিকদের বলছি, চা সুন্দরীর ২০০০ ঘর তৈরি। আজ কৃষি জমির কর দিতে হয় না। সবটাই ফ্রি। আপনার তথ্যের ভুল থাকলে দুয়ারে সরকারে গিয়ে আবেদন করে আসুন।’