ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের পর তিনি এঁকে দেখিয়েছিলেন কেমন করে সাজিয়ে তুলতে হবে তাঁর বাংলাকে। বলেছিলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রকৃতিই সহায়’। হ্যাঁ, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই স্বপ্নকেই বাস্তবায়নের পথে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার প্রকৃতি কীভাবে দুর্যোগ রুখতে পারে—তার পরিকল্পনা করতে ২৪ জনের বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির মাথায় রয়েছেম কল্যাণ রুদ্র। এছাড়া বাকি সদস্যরা হলেন— কলকাতা, যাদবপুর–সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য।
সোমবার নবান্নে একাধিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর সাংবাদিক বৈঠক করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় একাধিক সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবিলায় দিঘা, সুন্দরবনের জন্য মাস্টারপ্ল্যানের আবেদন জানানো হয়েছে কেন্দ্রের কাছে। এখানেই তিনি বলেন, ‘১১ তারিখ বান আসছে। ২৬ তারিখের বানে ইয়াসের চেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে। তাই আমাদের কিছু পদক্ষেপ করতে হবে। নিচু এলাকায় থাকা টিউবওয়েল খারাপ হয়েছে। পিএইচইকে দেখতে হবে উঁচু জায়গায় টিউবওয়েল বসানো যায় কিনা। আর ইটভাঁটাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজ বাড়াতে হবে। দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতিকে সামাল দিতে ১০০ দিনের কর্মীদের কাজ করতে হবে।’ এই বিষয়ে তিনি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন।
এদিন তিনি জানান, ইয়াস পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে যে কাজ চলছে তার ৫০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হবে ১০ জুন। তবে মহেশতলা এলাকার কাজ শেষ হতে ২৩ জুন পর্যন্ত সময় লাগবে। মৌসুনি এবং সাগর দ্বীপের কিছুটা অংশের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। এই এলাকায় ১১ তারিখের আগে বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে হবে। আর ১৮ জুন পর্যন্ত ত্রাণের আবেদন নেওয়ার কাজ চলবে। যেখানে যেখানে বান আসবে সেখানে ১১–১২ জুন পর্যন্ত আবেদনের কাজ বন্ধ থাকবে।
কয়েকদিন আগেই ত্রাণ–সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিজেপি নানা অভিযোগ তুলেছিল। এবার কাজ দিয়ে তার জবাব দেবেন মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে করা হচ্ছে। তাই তিনি ভেটিবার ঘাস রোপণের পরামর্শ দিলেন। এদিন তিনি বলেন, ‘রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে ডিভিসি যেন জল না ছাড়ে। তিন জায়গা থেকে জল এলে সামাল দিতে পারব না। তাই প্রতিনিয়ত নজর রাখতে হবে। এখনও ভারনারেবল ব্লক ১৭৫টি। সেদিকে নজর রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে। কুইক রেসপন্স টিম, ত্রাণ শিবির তৈরি করতে হবে। পশুদেরও উদ্ধার করতে হবে। যাতে কারও অসুবিধা না হয়।’