মুখ্যসচিব পদে চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির এক সপ্তাহের মধ্যে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্র। একদিকে কোভিড পরিস্থিতি, অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস–এর ধ্বংসলীলা। দুই দুর্যোগ সামলাতে রাজ্য যখন হিমশিম, তখনই মুখ্যসচিবের এই বদলির নির্দেশে রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাকে অসম্মানিত–অপমানিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে খবর খাওয়ানো হয়। তারপর মন্ত্রীদের দিয়ে বলানো হয়। আমরা ঘূর্ণিঝড়ের জন্য কাজ করছি। আর আমাকে বদনামের ছক সাজানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আপনার দুটো পা ধরলে যদি খুশি হন আমি বাংলার জন্য তাও করতে পারি। দয়া করে এই নোংরা খেলা খেলবেন না। মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা শেষ করুন। এই চিঠি প্রত্যাহার করুন। কোভিড–ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মানুষের জন্য মুখ্যসচিবকে কাজ করতে দিন। শুধু বাংলার উপরে এত রাগ কেন? বাঙালি বলে এত রাগ কেন? কই আমরা তো এমন করি না। আমি বাঙালি–অবাঙালি করতে চাই না।’
মোদী সরকারের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে জিতেছি, তাই কি আমাদের সঙ্গে এই আচরণ করা হচ্ছে? হার হজম করতে পারছেন না, তাই এমন আচরণ করা হচ্ছে? এভাবে আমাদের অপমান করবেন না। জনতার রায় মেনে নিন। আপনি শুধু আমাকে নয়, আমার সচিবদেরও হয়রান করছেন। আইএএস আধিকারিকরা মর্মাহত। অত্যন্ত দু:খ লেগেছে। রাজ্যের সঙ্গে বিনা আলোচনায় কীভাবে বদলি? দয়া করে মুখ্যসচিবের চিঠি প্রত্যাহার করুন। মুখ্যসচিবকে দিল্লি তলবের নির্দেশ প্রত্যাহার করুন। মুখ্যসচিবকে কাজ করতে দিন।’
সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা ছাড়া যারা অন্য রাজ্যেও মুখ্যসচিব আছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা আছে। ওদের সম্মান করুন, ওরা অনেক পরিশ্রম করে। আপনি আমার সচিবদের অপমান করছেন। আইপিএসদেরও লবি আছে, তাঁরা সকলে চমকে গিয়েছে। সংবিধান বিরোধী, একপাক্ষিক এই সিদ্ধান্ত আসলে আমার সরকারের অপমান, মুখ্যসচিবের অপমান। কেন এমন করছেন? আমরা নিরঙ্কুশভাবে জিতেছি। সেটাই কি আপনার সমস্যা? ভোটের সময় তো কম কিছু করেননি? কেন মানুষের রায় মানছেন না? বাংলার জন্য মনে হচ্ছে আলাদা ‘মার্শাল ল’ চলছে।’