রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ফলে জেলায় জেলায় বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অবস্থায় জলে দূষণ ছড়িয়ে পড়ে। সেই জল পান করলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন অনেকে। তাই উদ্যোগী হলেন তিনি।
বুধবার দুর্যোগের মধ্যেই নবান্নে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জলের সরবরাহ বজায় রাখার নির্দেশ দেন তিনি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। পরিশ্রুত পানীয় জলের সরবরাহ করতে হবে। যাতে দূষিত জল খেয়ে কেউ অসুস্থ না হয়ে পড়েন।’
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, পেটের গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে এই দূষিত জল পান করলে। তাই আগেভাগে সেই দিকে সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। ত্রাণ শিবিরে কেউ যাতে অসুস্থ না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। খাবারের সমস্যা যাতে না হয় সেটা খাদ্যসচিব দেখবেন। বিদ্যুতের সমস্যা দেখা দিলে তা তৎপরতার সঙ্গে ঠিক করতে হবে। অভিযোগ পেলে দ্রুত তার সমাধান করতে হবে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন দুর্গত এলাকার মানুষকে পানীয় জল সরবরাহ করতে হবে। ব্লকে ব্লকে জলের ব্যবস্থা করতে হবে। পানীয় জল থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হন। দূষিত জল খেয়ে মারা না যান, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
উল্লেখ্য, ঝড়ের তাণ্ডব, প্রবল জলোচ্ছ্বাসের জেরে ১৪টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবথেকে প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। শঙ্করপুর, দিঘা, মন্দারমণি–সহ নানা জায়গা বন্যা কবলিত। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১ কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১২৪টি জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। গোসাবার বহু গ্রাম প্লাবিত। ৩ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া, কেন্দামারিতে অনেক বাড়ি জলের তলায়। ১৫ লক্ষের বেশি মানুষকে রেসকিউ সেন্টারে রাখা হয়েছে। ১৪ হাজার রিলিফ ক্যাম্প গঠন করা হয়েছে। ১০ লক্ষ ত্রিপল, ১০ কোটি টাকার রিলিফ পাঠানো হয়েছে।