আজ, সোমবার নজরুল মঞ্চ থেকে ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে দুর্নীতিরোধ নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই পার্টির উপর নজরদারি দরকার বলেও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন কি না, তার খোঁজ নেবেন ‘দিদির দূত’রা। তবে আরও অনেক ধাপেই কাজ হবে এই প্রকল্পে।
ঠিক কী বলেছেন তৃণমূলনেত্রী? এদিন দুর্নীতি রুখতে কড়া বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ধানে একটি পোকা থেকে অনেক পোকা জন্মায়। তাই সেই পোকাকে আগেই নির্মূল করতে হবে। মনে রাখবেন, আমি নিজেও দলের ঊর্ধ্বে নই, মানুষের ঊর্ধ্বে নই। দুয়ারে সরকারের আইডিয়ার আর একটা রূপ এই কর্মসূচি। সরকার যে কাজ করছে, করুক। পার্টির কাছেও কিছু অভিযোগ আসে। তা এলে কাজ করতে হবে দলীয় স্তরে। অনেক প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকে। কিন্তু মানবিক কারণে তা এড়িয়ে সমাধানের কাজটা আগে করতে হবে।’
এবার বছরের দ্বিতীয় দিনেই ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নামে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ধাঁচেই চলবে তৃণমূল কংগ্রেসের জনসংযোগ। এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়, এই কর্মসূচির মধ্যে কি দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা, জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় আছে? উত্তরে মমতা বলেন, ‘নজরদারি তো রাখতেই হয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকা আগে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে যেত। এখন সরাসরি চলে যায়। কাজেই আমরা যে মনিটরিং (নজরদারি) করব, তারও সুযোগ অনেক কম। আমাদের নজর রাখতেই হয়। কৈফিয়ত তো পঞ্চায়েতকে দিতে হবে না। মানুষের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে আমাকে। যাঁরা ভাল কাজ করবেন, তাঁরা প্রশংসিত হবেন। তাঁদের আরও অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করানো হবে। যদি একটা পোকা ধানে জন্মায়, তাকে সমূলে বিনাশ না করলে কিন্তু ওই পোকাটা থেকেই সারা ধানে পোকা লেগে যাবে। সুতরাং, আমাকে পোকাটা আগেই নির্মূল করতে হবে। দেখতে হবে যাতে পোকা না জন্মায়। আর যদি পোকা জন্মে থাকে, তা হলে প্রথমে তাকে সতর্ক করতে হবে। বলতে হবে, হয় নিজেকে সংশোধন করো, না হলে আমাদের অন্য কিছু ভাবতে হবে। মনে রাখবেন, আমিও দলের ঊর্ধ্বে নই, মানুষের ঊর্ধ্বে নই।’
উল্লেখ্য, ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে আগামী দু’মাস ধরে পঞ্চায়েত এবং পুরসভা স্তরে নজরদারিই চালিয়ে যেতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা টিম পিকে’র মস্তিষ্কপ্রসূত নয়। এটা তৃণমূল কংগ্রেসের নিজস্ব আইটি সেলের দেওয়া নাম। তৃণমূল স্তরে জনসংযোগে আরও জোর দিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদল কীভাবে জয়ের ফসল ঘরে তোলে এখন সেটাই দেখার।