হাতে আর চারদিন বাকি। তার পরেই মানুষজন মেতে উঠবেন বড়দিনের উৎসবে। আর এই উৎসবের সূচনায় যোগ দিয়ে গোটা দেশের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর একধাপ এগিয়ে জানালেন, ২০২২ সাল থেকে রাজ্যে বড় করে পালিত হবে বড়দিন। শুধু কলকাতা নয়, বড়দিন পালিত হবে প্রতিটি জেলায়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘পিস ইজ দ্য মেন্টাল সলিউশন।’
পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্ক থেকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি নিজেও ২৪ তারিখ রাতের প্রার্থনায় থাকব। প্রতি বছরই থাকি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গোটা দেশ গোটা বিশ্বের মানুষকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাই। ফ্রম ভ্যাটিকান টু গোয়া, গোয়া টু কলকাতা। বড়দিনের অনুষ্ঠান আরও বড় করার চেষ্টা করুন। কৃষ্ণনগর, ব্যান্ডেল, ঝাড়গ্রামেও কত চার্চ আছে।’
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘দিন দিন দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়ছে। রাজনৈতিক দূষণ চলছে দেশজুড়ে। যদি শান্তি বজায় রাখতে হয় তবে মুখে হাসি রাখতে হবে। তবেই মানসিক শান্তি থাকবে। গোটা দেশে সম্প্রীতি, একতা বজায় রাখতে হবে। যে যার ধর্ম পালন করুন। কিন্তু দেশ মজবুত রাখতে গেলে ঐক্য মজবুত রাখতে হবে। আমাদের লড়াই করতে হবে। লড়াই আমরা করে নেব। বেদ থেকে বলি, আমরা একতার কথা বলি।’ এই মন্তব্য যে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে নাম না করে তা বুঝিয়ে দেন তিনি।
রবিবার কলকাতা পুরসভার নির্বাচন শেষ হয়েছে। বিরোধীরা নানা অভিযোগ তুলেছেন। এবার এই মঞ্চ থেকেই কলকাতার পুলিশ কমিশনারের প্রশংসা করে বিরোধীদের অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওঁরা খুব ভাল কাজ করছে। আর এত ভাল কাজ করছে বলেই আমরা শান্তিতে থাকছি।’ এরপরই ওমিক্রন নিয়ে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও ওমিক্রন থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। এটা বেশি ছড়ায়। বাইরে থেকে ইতিমধ্যেই ভারতবর্ষে বেশ কয়েকটা কেস এসেছে। তাঁদেরও অনুরোধ করব নিজেদের আইসোলেট রাখুন। পরিবারের সঙ্গে বেশি মেলামেশার দরকার নেই। মাস্ক কিন্তু আমাদের পরতেই হবে। নিজেরা সতর্ক থাকুন।’
আজ, সোমবার একেবারে নিজের বক্তব্যের শেষে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে গান গাইতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি খানিকটা সতর্ক করে দেন। তাই বলেন, ‘এবার যেন ভুলভাল গেও না। গান গাওয়া মুশকিল এরকম ভুল ধরলে’। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মুম্বই সফরে গিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চেয়ারে বসে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার অভিযোগ করেন বিজেপি নেতারা। তাই এই সতর্কবার্তা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।