বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মহাকরণ থেকে অফিসার–কর্মীদের উদ্দেশে স্লোগান তুলেছিলেন, ‘ডু ইট নাও’। তা নিয়ে চর্চা হলেও বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন অনেকেই। এবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্লোগান তুললেন, ‘ডু ইট ইন সেভেন ডেজ’। অর্থাৎ মানুষের অভিযোগ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে অ্যাকশন নিতে নির্দেশ দিলেন তিনি। আজ, বুধবার সব জেলাশাসক, শীর্ষস্তরের আমলা এবং পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশই দিয়েছেন।
কেন এমন নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী? সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে খবর এসেছে যে, তাঁর সচিবালয়ে অভিযোগ জমা পড়লেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। অর্থাৎ তিনি যাঁকে বা যাঁদের দায়িত্বে রেখেছেন তাঁরা সঠিক সময়ে কাজ করছেন না। তাই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সচিবালয় থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত—কোনও অভিযোগই যেন ফাইল চাপা পড়ে না থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে কোনও অভিযোগ এলে সেটা সাতদিনের মধ্যে ফয়সালা করতে হবে। এমনকী পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদ স্তরে কোনও অভিযোগ এলে তা দ্রুত সমাধান করতে হবে।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি এই অভিযোগ তাঁকে জানিয়েছেন। সেই ব্যক্তি ১৯৯৮ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জড়িত। অত্যন্ত সৎ সেই ব্যক্তি প্রমাণ–সহ এই অভিযোগ তাঁর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। যা দেখে মুখ্যমন্ত্রী কার্যত অবাক হয়ে যান। তবে তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর আজ তা করে দেখালেন। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই পঞ্চায়েতের কাজের উপর দেখভাল করতে জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক এবং বিডিও’দের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেখানেও দ্রুত মানুষের কাজ করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর কোথায় জোর দেওয়া হয়েছে? আজ নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সরকারের কোনও স্তরে কোনও চুরি বা ভুয়ো খরচ বরদাস্ত করা হবে না। কোনও টেন্ডারকে ভাঙা যাবে না। ছোট কাজেও ই–টেন্ডারের মাধ্যমে বরাত দিতে হবে। পঞ্চায়েতে অডিট করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশে তা পরিষ্কার লেখা রয়েছে। কাজে কোনও ঢিলেমি মেনে নেওয়া হবে না। পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি জমি এবং সম্পত্তিরও ম্যাপিং করে রাখতে হবে।