আজ, বুধবার আলিপুর জেলে সংগ্রহশালার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখান থেকেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার ভূমিকা থেকে শুরু করে এখন ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বাংলা না থাকলে স্বাধীনতা সংগ্রাম হতো না এবং থাকলে নবজাগরণ হতো না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী সংরক্ষণ করা হয়েছে। আলিপুর জেলের সংগ্রহশালা অন্যতম টুরিস্ট স্পট করা হয়েছে। নেতাজির বিভিন্ন নথি ডিজিটালি সংরক্ষণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন আলিপুর জেল সংগ্রহশালার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ইতিহাস বদলে দেওয়া হচ্ছে। ভূগোল বদলে দেওয়া হচ্ছে। যাতে আগামী প্রজন্ম কিছুই জানতে না পারে। কেন নতুন করে আমাদের ভাবতে হচ্ছে? কারণ রাজনৈতিক উদ্দেশে ইতিহাসে সব বদল করা হচ্ছে। আমরা তাই ইতিহাস সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছি।’
কেন এমন মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন নাম না করে বিজেপি তথা কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের সমালোচনা করতেই এমন মন্তব্য করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজির অনেক ফাইল এখনও প্রকাশ্যে আনেনি কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে মঙ্গল পাণ্ডে সম্পর্কে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছিল। মুঘল শাসনব্যবস্থা নিয়ে নানা সময় নানা মন্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মুখ থেকে শোনা গিয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এইসব কারণেই আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ইতিহাস বদলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।
ইতিহাস বাঁচাতে কী পদক্ষেপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে আজ বলেন, ‘বিধানসভায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সমস্ত নথি সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ডিজিটাল মাধ্যমে সেই নথি এবং ফাইলগুলি সংরক্ষিত করা হচ্ছে। এছাড়াও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিভিন্ন সামগ্রীও সংরক্ষণ করছে রাজ্য সরকার। কোন নেতা ভাল নেতা হয়? নেতা এমন হওয়া উচিত, যিনি ধর্ম–বর্ণ–জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন।’ অর্থাৎ এখন কেন্দ্রীয় সরকার যে জাতপাতের রাজনীতি করছে সেটাই সুকৌশলে বোঝাতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে করা হচ্ছে। আজ থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হল আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের সংগ্রহশালা। লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে এই সংগ্রহশালায় তুলে ধরা হবে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস।