এবারের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের ফলাফল মোটের উপর ভালোই হয়েছে। তবে কলকাতা সহ একাধিক শহরাঞ্চলে মোটের উপর শাসকদলের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি। তবে ভালো ফল করেও আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নারাজ শাসকদল। ইতিমধ্য়েই একাধিক ক্ষেত্রে তৃণমূল ভুল সংশোধনের রাস্তায় হাঁটছে। এমনকী প্রশাসনিক ক্ষেত্রে কোথাও যাতে শ্লথতা না আসে, কোথাও যাতে কাজ বকেয়া থেকে না যায় সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে ইতিমধ্য়েই বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী এনিয়ে একাধিক মিটিংয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের চেপে ধরছেন। পুলিশ প্রশাসনের কর্তারও তাঁর ধমকের মুখে পড়ছেন। সম্প্রতি ট্রাকের ওভারলোডিং নিয়ে তিনি বকাঝকা করেছিলেন। সেখান থেকে অবৈধভাবে টাকা আদায়ের বিষয়টিও তিনি সামনে এনেছিলেন। এবার বকেয়া প্রকল্পগুলির উপর জোর দিতে চাইছেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
মূলত একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী সমস্ত প্রকল্পের কাদ কতটা হয়েছে, কোন কাজ কতটা হয়নি। কেন হয়নি, কেন এভাবে প্রকল্পের কাজ পড়ে রয়েছে, এই কাজ করার ক্ষেত্রে আর কী প্রয়োজন সবটা তিনি জানতে চাইছেন।
এদিকে এমন একাধিক প্রকল্প সম্পর্কে তিনি জানতে চাইছেন যা হয়তো সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তার নজরে নেই। সেক্ষেত্রে কেবলমাত্র পূর্ত কিংবা বিদ্যুৎ দফতরের উপর নয়, বাংলার একাধিক প্রকল্প সম্পর্কে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে জানতে চাইছেন মুখ্য়মন্ত্রী। সেকারণে সব প্রশ্নের উত্তর যাতে ঠোঁটের গোড়ায় থাকে সেকারণে সবরকম উদ্যোগ নিচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
সমস্ত ক্ষেত্রে ফাইলগুলি আপ-টু-ডেট করার সব চেষ্টা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত মুখ্য়মন্ত্রী ঠিক কী ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারেন তা ভেবেই চিন্তায় পড়ে যাচ্ছেন একাধিক আমলা।
বাংলা ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুখ্য়মন্ত্রী বার বারই প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। কেবলমাত্র কলকাতা থেকে প্রশাসন চালানো নয়। একেবারে জেলায় জেলায় ঘুরে প্রশাসনিক বৈঠক করা এই বিশেষ পদ্ধতি নিয়েছিল তৃণমূল সরকার। সেই ব্যবস্থাটা এখনও চলছে। সেখানে জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলার মুখ্য় স্বাস্থ্য় আধিকারিক, জেলার বিভিন্ন দফতরের কর্তারা হাজির থাকেন। সেই সঙ্গেই জেলার ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয় সেই বৈঠকে। সেখানেই মুখ্য়মন্ত্রী একের পর এক প্রশ্ন করেন। কোথায় কোন প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে, আর কতটা কাজ করা দরকার, কেন হয়নি তা তিনি জানতে চান। এমনকী কোথাও অনিয়ম হলেও চেপে ধরেন। আর সদুত্তর দিতে না পারলেই মুখ্য়মন্ত্রী রোষের মুখে পড়তে হয় সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের।