বাংলার বিরুদ্ধে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে দু’দিনের ধরনা কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসেছেন। আজ, বুধবার নির্ধারিত সময়েই ধরনা মঞ্চে এসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত বক্সি, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়–সহ তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব। টানা ৩০ ঘণ্টা তিনি ধরনায় বসবেন বলে সূত্রের খবর। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধরনা মঞ্চে হাজির হন বাবুল সুপ্রিয়। রয়েছেন প্রিয়দর্শিনী হাকিমও। ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছে রেড রোডের মঞ্চে।
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে রাখলেন ভারতের সংবিধান। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মালা পরিয়ে দিলেন সংবিধানের বইয়ে। ১০০ দিনের কাজ–সহ একাধিক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে রাজ্যকে বঞ্চনার প্রতিবাদ–সহ একাধিক ইস্যুতে তৃণমূল সুপ্রিমোর এই কর্মসূচি আজ ও কাল দু’দিন ধরে চলবে। দু’পাশে বসে রয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং অরূপ বিশ্বাস। পাশে রয়েছেন ইন্দ্রনীল সেনও। সামনে বসে রয়েছেন অন্য নেতা–নেত্রীরা। মমতার লেখা কবিতা সুরে বেঁধে গান বাজছে ধরনা মঞ্চ রেড রোডে।
নয়টি ইস্যু ঠিক কী কী? আজ ধরনা মঞ্চে মূলত ৯টি ইস্যুকে সামনে রেখে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কর্মসূচি শুরুর আগে ধরনা মঞ্চেও দেখা গেল এই ইস্যুগুলির উল্লেখ। ইস্যুগুলি হল—তৃণমূল সরকারের সাফল্যে প্রতিহিংসাপরায়ন বিজেপি সরকার বাংলাকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। ১০০ দিনের কাজে বকেয়া সাত হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এই প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। কাজ করেও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত প্রায় ১৭ লক্ষ পরিবার। আবাস যোজনায় কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা, ১১ লক্ষ্য ৩৬ হাজার পরিবার বঞ্চিত হচ্ছে পাকা বাড়ি থেকে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দ্বারা বিরোধীদের হেনস্থা। আদানির স্বার্থে এলআইসি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে গচ্ছিত জনগণের অর্থ নয়ছয়ের তদন্তের দাবি। পেট্রোল ডিজেল রান্নার গ্যাস আর কেরোসিনের দাম আকাশছোঁয়া।
অন্যদিকে লাভজনক কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে কাজ হারাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ। ধর্ম ও জাতপাতের রাজনীতি করে সবার মধ্যে বিভেদ তৈরির করার চেষ্টা চলছে। স্বাধীন ভাবনাচিন্তা মতপ্রকাশের অধিকার কমে এসেছে। ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে আঘাত আসছে। এমন সব কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও আবার রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। অথচ বিভিন্ন সময় রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পগুলিকে পুরষ্কৃত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরও রাজ্যের প্রাপ্য টাকা দেওয়ার বেলায় অনীহা দেখিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্র–রাজ্য সংঘাতের এই আবহে ধরনায় বসেছেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান।