একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রবল চেষ্টাকে উড়িয়ে দিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এমনকী এই নির্বাচনে বাংলায় সর্বশক্তি ঢেলে দিয়েছিল বিজেপি। তারপর বিজেপির শীর্ষ নেতারা স্লোগান তুলেছিলেন, ‘অব কি বার, দোশো পার।’ কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। তারপর বাংলায় যতগুলি নির্বাচন বা উপনির্বাচন হয়েছে সব কটিতেই হেরেছে বিজেপি। তারপর নামিয়ে আনা হয়েছে ইডি–সিবিআইকে। কিন্তু আজ ২ মে। তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের দু’বছর পূর্তিতে রাজ্যের মানুষকে অভিনন্দন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সঙ্গে টুইট করে দিলেন লড়াইয়ের বার্তা।
ঠিক কী লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী? আজ মঙ্গলবার সরকারের দ্বিতীয় বর্ষের পূর্তিতে একদিকে মানুষকে লড়াই করার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে নাম না করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করে জেতার ডাকও দিয়েছেন। তাই টুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘২০২১ সালে আজকের দিনে বাংলার মা–মাটি–মানুষ সারা পৃথিবীতে দেখিয়েছিলেন যে গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোন শক্তি নেই। আর সেজন্য আমি তাঁদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। প্রকৃত জাতি নির্মাণে আমাদের প্রয়াস জারি রাখতে হবে, দায়বদ্ধতা বজায় রাখতে হবে। কারণ আগামী দিনে আমাদের অনেক যুদ্ধ লড়তে হবে, জিততেও হবে।’ অর্থাৎ পঞ্চায়েত–লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে জেতার কথা বলেছেন তিনি।
বিজেপি ঠিক কী বলছে? এই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় টুইট করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর কটাক্ষ করেছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। শুভেন্দু টুইটে লেখেন, ‘২০২১ সালের ২ মে, যাঁরা অভূতপূর্ব ভোট পরবর্তী ভয়াবহ হিংসা এবং সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলেন তাঁদের শ্রদ্ধা জানাই। সেই কালো দিনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি পালন করা হচ্ছে। এখন আঞ্চলিক দলে পরিণত হওয়া তৃণমূল কংগ্রেস সবরকম নৃশংসতা দেখিয়েছিল। বাংলার গণতন্ত্রের ইতিহাসে এটা অভিশপ্ত, কালো দিন। আমাদের কর্মীদের বলিদান কখনও ভুলব না। তাঁদের সঠিক বিচার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। বাংলার বিজেপি কর্মীদের ওপর সেই অত্যাচারের কথা আমরা যেন ভুলে না যাই।’ আর কটাক্ষ করে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এটাও নিশ্চয়ই স্মরণে আছে যে, তাঁর নন্দীগ্রামে হারেরও আজ দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি।’
আর কী জানা যাচ্ছে? ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বাম–কংগ্রেস জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতায় ফিরেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু একুশের নির্বাচনে সবাই পরাজিত হয়েছে। আর বিজেপি হয়েছে প্রধান বিরোধী দল। এখন ইডি–সিবিআইকে সামনে রেখে বিজেপি ঘর গোছাতে চাইছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা–মন্ত্রী–বিধায়ক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে জেলে গিয়েছেন। কিন্তু সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপর লোকসভা নির্বাচন আছে। সেখানেই বিজেপিকে লড়াই করে পরাস্ত করার ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মনে করা হচ্ছে।