রামনবমীতে হাওড়া কাণ্ডে কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজিপাড়া থেকে সন্ধ্যাবাজার পর্যন্ত জিটি রোড সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এই ঘটনায় হামলাকারীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী আজ, শুক্রবারের পবিত্র নমাজের সময় হাওড়ায় আবার উসকানি দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাই শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী শিবপুরের ঘটনায় সরব হন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে। যাদের জেরে বৃহস্পতিবার আগুন লেগেছিল শিবপুরের বুকে।
এদিকে রামনবমীতে হাওড়ায় যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য বিজেপি, বজরং দল, হিন্দু মহাসভাকে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা, ‘আমরা হাতে চুড়ি পরে বসে নেই। নাটের গুরুদের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। হাওড়ায় হিন্দুরা হামলা করেনি। যারা করেছে তারা সব ক্রিমিনাল। বিজেপি আর ওদের ওই বজরং দল, হিন্দু মহসভা কী সব মাথামুন্ডু আছে, তারা এটা করেছে। কোনও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এই ঘটনা ঘটাতে পারে না। ওদের রমজান চলছে। ওরা কোনও অন্যায় করেনি। হিন্দুরাও এই ধরনের কাজ করতে পারে না। সরাসরি হামলা হয়েছে। এই হামলা ডাকাতরা করে।’
আজ, রমজান মাসের শুক্রবার। মুসলিমদের এই দিনে বিশেষ নামাজ থাকে। ওই টেলিফোন সাক্ষাৎকারে সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘শুনেছি হাওড়ার মুসলমানরা জুম্মার নামাজের পর ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করেছেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা এটা করবেন না। প্রতিবাদের ভাষাটা আমার উপর ছাড়ুন। প্রতিরোধটা আমি করব। ইচ্ছাকৃতভাবে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আমি ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের বলছি, আমার ওপর ভরসা রাখুন। যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সবাই শান্তিতে থাকুন। নতুন করে কোনও অশান্তির ঘটনায় পা ফেলবেন না। আমি পুলিশকে বলে দিয়েছি যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের যেন রেয়াত করা না হয়। সবাইকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হবে।’
তাহলে এখন কোন পদক্ষেপ করা হবে? অন্যদিকে হাওড়া শহরে অঞ্জনী পুত্র সেনা নামে একটি সংগঠন রামনবমীর মিছিল বের করেছিল। সেই মিছিল যখন কাজিপাড়ায় আসে তখন মিছিল থেকে লোক বেরিয়ে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষকে জোর করে আবির মাখাতে শুরু করেন। সেখান থেকেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে বলে অভিযোগ। মিছিলে লোকেরা হাতে তলোয়ার, রড, হাঁসুয়া নিয়ে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়িতে, গাড়িতে, দোকানে হামলা করে। পেট্রল বোমা মারা হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী আজ সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন, ‘কিছু নাটের গুরু আছে যারা টাকা দিয়ে এই সব ঘটনা ঘটায়। এই নাটের গুরুদের খুঁজে বের করা হবে। যারা এই দাঙ্গা করেছে, যতই মামলা করুক আর হামলা করুক, কোনও অজুহাত আমি শুনব না। আমি দাঙ্গাকারীদের প্রশ্রয় দিই না। আমি দাঙ্গাকারীদের দেশের শত্রু মনে করি। আমি কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেব না। যারা দোষী তাঁদের শাস্তি হবেই। বিজেপির অনেক শাখা রয়েছে। ওরাই পরিকল্পনামাফিক এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’