এখনও পর্যন্ত তিন দফায় টাকা রাজ্যকে দিয়েছে কেন্দ্র। এক, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার টাকা। দুই, আবাস যোজনার টাকা এবং তিন, জিএসটি বাবদ টাকা। কিছু কিছু করে দেওয়া হলেও একেবারে বাকি থেকে গিয়েছে একশো দিনের টাকা। সেটা আটকে রয়েছে এক বছর ধরে। ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর মাসের পর থেকে বাংলার জন্য এই খাতে আর কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। সব কিছুর জবাব দেওয়া হয়েছে। মেনে নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের চাপানো শর্তও। কিন্তু বরাদ্দ এখনও মেলেনি। এই প্রেক্ষাপটে আগামী ৫ ডিসেম্বর নয়াদিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখোমুখি হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তবে কি বড়দিনেই মিলবে একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা? আশা বুক বাঁধছে গোটা বাংলা।
আর কী জানা যাচ্ছে? ১০০ দিনের প্রকল্পের বরাদ্দ অনুমোদনের জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত আরোপ করেছে কেন্দ্র। সেসব পূরণ করা হলেও টাকা মেলেনি বলে অভিযোগ নবান্নের। হকের টাকা আদায় করতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে বারবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দরবার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টাকা না পেয়ে ১০০ দিনের প্রকল্পের শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করেছেন। তার মজুরি বাবদ রাজ্যের কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে প্রায় ১,৮০০ কোটি টাকা। ৯ কোটি ১৮ লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টি করেছে রাজ্য সরকার। কাজ দেওয়া হয়েছে বাংলার ৩৬ লক্ষ গ্রামীণ মানুষজনকে।
আর কী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী? পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে ন্যায্য পাওনা থেকে রাজ্যকে বঞ্চিত করে রাখার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন সভা–সমাবেশ থেকে কেন্দ্রকে স্মরণ করে দিয়েছেন—দয়া–দাক্ষিণ্য নয়, বাংলা থেকে নিয়ে যাওয়া কর বাবদ অর্থের সাংবিধানিক স্বীকৃত অংশই চাইছেন তিনি। বারবার বলার পর দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখা আবাস এবং সড়ক যোজনার জন্য বরাদ্দ পুনরায় নির্ধারণ করতে কার্যত বাধ্য হয়েছে মোদী সরকার। তবে একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে আলোচনা চলছেই।
কেন আশায় বুক বাঁধছেন গ্রামীণ মানুষজন? এই ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজধানী সফর। তাই সেখানে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করতে পারেন একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে। তাই নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে গ্রামবাংলায়। নয়াদিল্লিতে মোদীর সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে মমতার। ১০০ দিনের প্রকল্পে বকেয়া তো রয়েছেই, এমনকী চলতি আর্থিক বছরে ৩২ কোটিরও বেশি শ্রমদিবসের সৃষ্টির বিষয়ে বাংলার আর্জি এখনও মঞ্জুর হয়নি।