রাজনীতিতে ‘সৌজন্যের’ কথা বারবার শুনতে পাওয়া যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। আর সেটা তিনি ভরা বিধানসভায় আজ, শুক্রবার নিজেই করে দেখালেন। তখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বক্তব্য রাখছিলেন। এমন সময় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়করা চিৎকার করে বাধা দেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই উঠে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কদের ধমক দিয়ে বলেন, ‘বক্তৃতায় যেন কোনও বাধা না পড়ে’। শুক্রবার সকালে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে এমন সৌজন্যই দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী ঘটেছে বিধানসভায়? আজ, শুক্রবার সংবিধান দিবস পালন করা হয়। আর তা নিয়ে বলতে শুরু করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। তবে শুভেন্দুর বক্তব্য শুরু থেকেই খোঁচা নির্ভর ছিল। তখন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা শোরগোল শুরু করেন। সেটা দেখতে পেয়েই রুখে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ধমক দিয়ে বলেন, ‘কেউ বাধা দেবে না। সবাই চুপ করে থাকো।’ এক ধমকে থেমে যায় গোলমাল। নিশ্চিন্তে বক্তৃতা শেষ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
আর কী দেখা গেল? এদিন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর প্রশ্নের উত্তর দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর জেলা পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরকে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন সরকারি হাসপাতালে দালালরাজ নিয়ে। আবার আজ বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বক্তৃতা করার সময় টিকা টিপ্পনী ভেসে আসে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের আসন থেকে। সেটা দেখতে পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বিধায়কদের সতর্ক করে দেন।
হঠাৎ ঠিক কী হল? বিধানসভায় সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে আগে অভিযোগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সংবিধান দিবস থাকায় গণতন্ত্রের পীঠস্থানে সৌজন্য দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিলেন তিনি সংবিধান মেনেই চলেন। এরপর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে দেখা করতে যান শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল এবং বিরোধী বিজেপির বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। মুখ্যমন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের জানান, তিনি চা খাওয়ার আমন্ত্রণ করেছিলেন শুভেন্দুদের। দু’দিন আগে রাজভবনে বিমান বসুকেও তিনি সৌজন্য দেখিয়েছেন। আর আজকের ঘটনা দিয়ে দুটি বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক, বিরোধী দলনেতার অভিযোগ সঠিক নয়। দুই, তিনি সংবিধান মেনে চলেন।