বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী পরিষ্কার করে দিয়েছেন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়তে চলেছেন। তাঁর গন্তব্য যে বিজেপি, সেটাও আর কারও অজানা নয়। তবুও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শুভেন্দুকে আশীর্বাদ করলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের অন্যতম সংখ্যালঘু মুখ আবদুল মান্নান। এমনকী বললেন, ‘যে আগুন নিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে শেষ করার চেষ্টা করেছেন, সেই আগুনে এবার নিজে পুড়ে ছাই হয়ে যাবেন।’
এবার বিধানসভা নির্বাচনে বাম–কংগ্রেস জোট করেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সেখানে তৃণমূল দুর্বল হলে লাভ জোটের বলে অনেকে মনে করেন। কারণ বিজেপি বিরোধী একটা হাওয়া এখনও আছে রাজ্যে। সেটাকে ধরতে সুবিধা হবে এবং সাফল্য আসবে। এই বিষয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘বিজেপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে যে রাস্তাতে কংগ্রেসকে শেষ করেছেন, সেই একই রাস্তায় শুভেন্দু বাংলায় স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটাবে। ওঁর লড়াই সফল হোক। ওঁর ধর্মনিরপেক্ষ নীতি আদর্শের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে ও বাংলাকে স্বৈরাচারমুক্ত করবেন।’
মমতাকে তোপ দেগে মান্নান বলেন, ‘আরএসএস তো তৃণমূল নেত্রীর হাত ধরে এসেছেন। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময় ক্যাবিনেট মন্ত্রী হয়েছেন। বাবরি মসজিদ ভাঙার সময় বিজেপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। গোধরার পরে মোদীকে ফুলের তোড়া পাঠিয়েছেন। তখন মনে ছিল না। নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন ছিল কংগ্রেস মুক্ত ভারত আর এখানে বাম–কংগ্রেসকে খতম করো।’
শুভেন্দুর বিধায়ক পদ ত্যাগের ঠিক পরে মান্নানের মুখে তাঁর গুণগান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির প্রশংসা করাটা। শুভেন্দু অধিকারী যে দলত্যাগ করলেও কংগ্রেসের পথে পা বাড়াবেন না, তা স্পষ্ট। শেষ বয়সে মান্নান সাহেবও বিজেপি’র পথে যাবেন বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে মান্নান সাহেব বুঝতে পেরেছেন, এই মুহূর্তে বাংলায় কংগ্রেসের যে সাংগঠনিক ক্ষমতা তাতে মমতা সরকারের পতন ঘটানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই শুভেন্দুকে আশীর্বাদ করে তাঁকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করলেন।
দল ভাঙানো নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করে মান্নানের কটাক্ষ, ‘২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আমাদের কত বিধায়ককে ভাঙিয়েছে। আমাদের বিধায়ক ওদের দলের জেলা সভাপতি হচ্ছে। এখন আর্তনাদ করে কী হবে! মমতার আর্তনাদে মানুষ উল্লসিত হচ্ছে। ভাইপো কোটি কোটি টাকা করেছে। এই স্বৈরাচারী শাসনে মানুষ বিরক্ত। বিরোধী দলের মর্যাদা পর্যন্ত দেননি এত স্বৈরাচারী।’