রান্নার গ্যাস থেকে শুরু করে জ্বালানি তেলের দাম অত্যাধিক হারে বেড়েছে। তার উপর নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি এবং দ্রব্যের দামও অত্যাধিক হারে বেড়েছে। এই অবস্থায় নাজেহাল অবস্থা নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত মানুষের। কিন্তু, এরই মধ্যে বিদ্যুতের বিল দেখে ধাক্কা খেয়েছেন অনেকেই। অভিযোগ উঠেছে সকলের অজান্তেই বিদ্যুতের মাশুল বাড়ানো হয়েছে। যদিও রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার দাবি, বিদ্যুতের বিল বাড়ানো হয়নি। তবে ফিক্সড চার্জ কিছুটা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ১৩ দিন ধরে বিদ্যুৎ ছিল না পূর্ব বর্ধমানের কাদাপাড়ায়, অবশেষে আজ ফিরল বিদ্যুৎ
অগস্টের (মে, জুন, জুলাই) বিল দেখার পরেই তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন অনেক গৃহকর্তা। তাঁদের অনেকের অভিযোগ, তিন মাস যেহেতু তাপপ্রবাহ চলছিল সেই কারণে পাখা, এসি বেশি পরিমাণে চলেছে। ফলে বিদ্যুতের বিল বেশি আসারই কথা। কিন্তু, যে পরিমাণ বিল বেশি আসার কথা তার থেকে কয়েক গুণ বেশি বিল এসেছে বলে অভিযোগ। অর্থাৎ বিদ্যুৎ ব্যবহারের সঙ্গে বিল সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে শুধু এসি রয়েছে বলেই যে বিদ্যুতের বিল বেশি হয়েছে তা নয়। এমন অনেক বাড়িতেই এসি নেই অথচ সেই বাড়িতে বিল স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি এসেছে বলেই অভিযোগ।
বিদ্যুতের বিল যে বেশি এসেছে সে কথা কার্যত মেনে নিয়েছে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা। এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মার্চ মাসে রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের অনুমোদনের পরেই ফিক্সড চার্জ সামান্য বেড়েছে। তাছাড়া, বিদ্যুৎ ব্যবহার না হলে যে ন্যূনতম চার্জ নেওয়া হত সেই খরচও কিছুটা বেড়েছে। তবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য যে টাকা নেওয়া হত সেই টাকা বাড়েনি। এদিকে, বিদ্যুতের বিল বেশি আসার কারণ হিসেবে তারা প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুতের বেশি ব্যবহার করাকেই উল্লেখ করেছেন।
প্রসঙ্গত, এবার রাজ্যের বিস্তীর্ণ জায়গায় ব্যাপকভাবে লোডশেডিং হয়েছে। তা সত্ত্বেও যে পরিমাণে বিল এসেছে তা দেখে কার্যত মাথায় হাত অনেকের। তাদের অভিযোগ, তিন মাসে যেখানে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকার বিল মেটানো হয়, সেখানে এবার ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল এসেছে। এমনকী যারা দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বিল মেটান তাদের বিল এসেছে ৩ থেকে তার ৪ হাজার টাকা।
যদিও রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা দাবি করেছে, মাসুল হার দীর্ঘদিন ধরে বাড়েনি। ফলে তাদের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো নয়। এরকম চলতে থাকলে আগামীতে তারা আরও সমস্যায় পড়বেন। তারওপর জ্বালানি খরচ বেড়েছে। এই অবস্থায় মাসুল বাড়ানোর জন্য রাজ্য কমিশনের সম্মতি মেলেনি বলে তাদের দাবি।
বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে মাসে প্রতি কেবি বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য স্থায়ী খরচ হিসেবে ১৫ টাকা নেওয়া হত, এখন তা বের হয়েছে ৩০ টাকা। তাছাড়া বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহার কম হলেও নূন্যতম যে ৫০ টাকা নেওয়া হত এখন তা আরও কিছুটা বেড়েছে। প্রতিমাসে প্রতি কেবি বিদ্যুতের জন্য ৭৫ টাকা বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিল কিছুটা বেড়েছে। আর তাছাড়া এসির লোড বাড়ানোর জন্য বিল আরও কিছুটা বেড়েছে। এ বিষয়ে অনেকের দাবি, সিইএসসির মতো ৩ মাসের পরিবর্তে প্রতি মাসে বিল দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হোক। তাতে কতটা ইউনিট খরচ হচ্ছে তা স্পষ্ট বোঝা যাবে। কোনও মাসে বেশি বিল আসলে পরের মাসে তা নিয়ন্ত্রণ করতেও সুবিধা হবে।