করোনা আবহে জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি! চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে তাঁরা প্রধান সচিবকে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে।
এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক আধিকারিক জানান, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে করোনা চিকিৎসা পরিষেবার ঘোষণা করার পরই প্রচুর পরিমাণ মাস্ক, পিপিই–সহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। ইতিমধ্যে প্রায় ৩০ লক্ষ পিপিই, ৩৭ লক্ষ এন৯৫ মাস্ক ও ৪০ লক্ষ গ্লাভস অর্ডার দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
বোঝাই যাচ্ছে, মহামারী মোকাবিলার জন্য গত কয়েক মাসে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ বহু প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনেছে। আর তাতে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই লেনদেনের ব্যাপারেই দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
মূলত রাজ্যের প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে থাকে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশন লিমিটেড নামে এক সংস্থা। রাজ্য সরকারের অধীন এই সংস্থা সাধারণত প্রচুর পরিমাণে চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনে এবং এতে অনেকটা সময় লাগে। করোনা আবহে যাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ পাওয়া যায় তাই সরকার আলাদা একটি কমিটি গঠন করে।
সরকারি ওই আধিকারিক আরও জানান, নিয়মের বাইরে গিয়ে কিছু নির্দিষ্ট এজেন্সি থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা–সহ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে, পণ্যগুলির গুণমানও নিকৃষ্ট ছিল। কিছুদিন আগে এই কথা মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছোয়। পরে তিনি এ বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এর পরই অভিযোগগুলি তদন্ত করে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়।
সাম্প্রতিককালে আমফান ত্রাণ ও রেশন বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জনরোষও দেখা দেয়। আর তা সামলানোর জন্য শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই আসরে নামতে হয়। আর এবার চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা নিয়ে দুর্নীতির ঘটনাতেও তার অন্যথা হল না।