কোনও ভাবেই লকডাউনে কোনও শিথিলতা করা যাবে না। নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে স্পষ্ট করল কেন্দ্রীয় সরকার। চিঠিতে জানানো হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন একাধিক ক্ষেত্রকে ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকী রাজাবাজার, তপসিয়া, গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজের মতো এলাকায় সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের কোনও বিধিই মানা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।
কেন্দ্রীয় সরকারের ডেপুটি সেক্রেটারি শ্রীনিবাসু কে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব ও পুলিশের ডিজিকে জানিয়েছেন, রাজ্যে লকডাউনের বিধি ক্রমশ শিথিল করা হচ্ছে। অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন ক্ষেত্রকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে লকডাউন থেকে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর মিলেছে, মেটিয়াবুরুজ, রাজাবাজার, নারকেলডাঙা, তপসিয়া, গার্ডেনরিচ. ইকবালপুর ও মানিকতলায় মাছ, মাংস ও সবজির বাজারে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না। এর মধ্যে নারকেলডাঙায় ইতিমধ্যে কোরনাভাইরাস আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
এছাড়া পুলিশ ধর্মীয় জমায়েত করতে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। রেশন দোকানের বদলে রাজনৈতিক নেতারা রেশন বিলি করছেন বলেও অভিযোগ করেছে কেন্দ্র। যা করোনা সংক্রমণের কারণ হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রের ওই চিঠিতে।
এই সব কর্মকাণ্ড কেন্দ্রের জারি করা বিধিনিষেধ বিরোধী ও এতে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর অধীনে পদক্ষেপ করা হতে পারে জানিয়েছেন কেন্দ্রের ওই আমলা। ভবিষ্যতে এই ধরনের বিধিভঙ্গে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
শনিবার বিলেকে এই চিঠিটি টুইটারে শেয়ার করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘এই নিন, অনেকদিন ধরেই প্রশ্ন তুলছিলাম,গতকালও বলেছি ফুল, মিষ্টি ইত্যাদির ওপর থেকে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে কি বোঝাতে চাইছেন দিদি?উনি কি বলতে চাইছেন যে ওনার নেতৃত্বে বাংলা করোনা-কে হারিয়ে দিয়েছে?আর ভয়ের কিচ্ছু নেই?আসলে #DisasterManagemntAct -এর অবমাননা করছেন উনি-এটাই সত্যি!’
শুক্রবার এক টুইটে হাওড়ার জগন্নাথ ঘাটের ফুলের বাজারের ভিডিয়ো প্রকাশ করেন বাবুল সুপ্রিয়। তাতে দেখা যায়, লকডাউনের মধ্যেই জগন্নাথঘাটের পাইকারি ফুলের বাজারে থিক থিক করছে ভিড়। সঙ্গে তিনি লেখেন, ‘দয়া করে মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনবেন না।‘
বলে রাখি, গত এর সপ্তাহে ধাপে ধাপে বেশ কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন পরিষেবাকে লকডাউনে ছাড় ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিষ্টির দোকান, বিড়ি শিল্প, পানের দোকান ও ফুলের ব্যবসাকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে আনেন তিনি। তার পরই শুরু হয় বিতর্ক।
বিজেপির দাবি, লকডাউন শিথিল করে মমতা বোঝাতে চাইছেন, করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিতে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। যদিও আসল লড়াই এখনো বাকি।