পুলিশ তুমি যতই থাকো, বড়দিনের রাতই বড়! শুক্রবার রাতে যেন এই স্লোগানই তুলল কল্লোলিনী কলকাতার মানুষজন। মাস্কবিহীন মুখগুলি যেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে করোনাভাইরাসকে। পুলিশ থাকলেও এই জনস্রোতকে আটকে থাকল সেভাবে। তাঁরা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই চেষ্টার বাঁধ ভেঙে শোনা গেল, মাস্কহীন এক যুগল বলছেন, ‘বছর শেষ, করোনাও শেষ। চারদিকে সব স্বাভাবিক।’
বড়দিনে সন্ধ্যার সাঁঝবাতিগুলি যত রাতের দিকে আলো ছড়িয়েছে, শহরে ভিড়ের জন্য পরিচিত জায়গাগুলিতে নেমেছিল জনপ্লাবন। মাস্ক খুলে দেদার নিজস্বী তুলতে দেখা গিয়েছে অগুনতি মানুষকে। কেউ আনন্দের আতিশয্যে মাস্ক পরে থাকারই প্রয়োজন মনে করেননি। নিশ্চুপ পুলিশ–প্রশাসনের সামনে বিধি পালন, দূরত্ববিধি রয়ে গেল মুখের কথা হয়েই! কারণ এই উদ্দাম জনস্রোতকে মূলস্রোতে নিয়ে আসা কঠিন।
চিড়িয়াখানা থেকে বেরিয়ে আসা মানুষদের কারও মুখে মাস্ক ছিল না। ভিড়ের মধ্যেই রাস্তার পরিবারের সঙ্গে বসে খেতে ব্যস্ত অনেক পরিবারই। কান পাতলে শোনা গেল, মাস্ক এখন আর পরার প্রয়োজন নেই। এখন আর ভাইরাসের সেই শক্তি নেই! তা হারিয়েছে। এই মন্তব্য শিক্ষিত পরিবারের সদস্যদের। যা ভাবিয়ে তুলেছে গোটা সমাজকে।
ময়দান চত্বরের একটি রেস্তরাঁর সামনে লেখা, ‘বিনা মাস্কে প্রবেশ নিষেধ’। কিন্তু তার সামনেই যে লম্বা লাইন অপেক্ষা করছিল সেখানে বেশিরভাগ মানুষেরই মুখে মাস্ক ছিল না। একই চেহারা শহরের পানশালা–রেস্তরাঁগুলির সামনেও। অর্থাৎ সবই স্রেফ নির্দেশিকায় রয়ে গেল। কাআজ সবাই যেন বেপরোয়া।
কলকাতা পুলিশের অবশ্য দাবি, শহরে বাড়তি বাহিনী মোতায়েন রাখার পাশাপাশি করোনা বিধি কার্যকর করতে কড়া অবস্থান নিয়েছে তারা। রাত ৯টা পর্যন্ত মাস্কহীন ১০৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রকাশ্যে থুতু ফেলার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ২৫ জনের বিরুদ্ধে। আটক করা হয়েছে ১৬টি গাড়ি। বিশৃঙ্খল আচরণের জন্য আটক করা হয়েছে ২৩১ জনকে। মদ উদ্ধার হয়েছে ১৫ লিটার। কিন্তু তারপরও বড়দিনের সন্ধ্যায় এই ছবি ধরা পড়েছে পার্ক স্ট্রিট জুড়েই। সব মিলিয়ে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার তোয়াক্কা না করেই ক্রিসমাসেও বিধিভঙ্গের নজির গড়েই রাত জাগল মহানগর।