করোনায় মৃত এক রোগীর দেহ টানা ৪০ ঘণ্টার উপর ধরে পড়ে থাকল বেসরকারি হাসপাতালে। নেওয়া হল না দেহ দাহ করার উদ্যোগ। পরিবারের অভিযোগ, ওই হাসপাতালে মর্গ না থাকায়, তাঁদের আত্মীয়ের দেহ প্লাস্টিকে জড়িয়ে হাসপাতালেরই একটি ঘরে ফেলে রাখা হয়েছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অবশ্য হাসপাতালের তরফে এই অভিযোগের বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ, মৃতের পরিবারের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার দেহ দাহ করার আবেদন করা হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি তারা। ঘটনা ঘিরে হুলুস্থুল কাণ্ড বেঁধে যায় কাশীপুরে।
মৃত ওই ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগ, যখনই তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দেহ দাহ করার আবেদন নিয়ে গিয়েছেন, তখনই হাসপাতাল দায় চাপিয়েছে পুরসভার ঘাড়ে। আবার পুরসভার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে হাসপাতাল দেহ দাহ করার কথা আগে বলা হয়নি। দু’পক্ষের এই টানাপড়েনের মাঝেই ৪০ ঘণ্টার উপর সময় কেটে গিয়েছে। এই গতরাত পর্যন্তও দেহ দাহ করা হয়নি।
ঘটনাটি ঘটেছে কাশীপুর থানা এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গত ২২ এপ্রিল অসুস্থ হয়ে ওই হাসপাতালে ভরতি হন কাশীপুর এলাকার বাসিন্দা সুকুমার দাস। এরপর তাঁর করোনার পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তখন থেকেই ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। অভিযোগ, নিয়ম অনুয়ায়ী পুরসভার তরফ থেকে দেহ দাহ করার কথা থাকলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত সেই দেহ হাসপাতালের একটি ঘরে প্লাস্টিক মোড়া অবস্থায় পড়ে থাকে।
মৃতের ভাগনে কৃষ্ণেন্দু বাগ বলেন, ‘আমাদের মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করুন। কোভিড প্রোটোকল অনুয়ায়ী মামার দেহ আর আমরা দেখতে পাব না। অথচ দু’দিন হতে চলল দেহটি হাসপাতালেই পচছে। তিনি মারা গিয়েছেন বৃহস্পতিবার সকালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে মোটা অঙ্কের বিল ধরানো হয়েছিল। আমরা সেটা নিয়ে কাশীপুর থানার দ্বারস্থ হই। থানার মধ্যস্থতায় সমস্যা মেটে। ৭০,০০০ টাকা মেটানো হয়। পরে হাসপাতাল জানায়, অন্যান্য করোনা দেহের চাপের কারণে পুরসভার গাড়ি আসতে দেরি হবে। ওই দিন পেরিয়ে গিয়ে শুক্রবার রাত হয়ে গেল কিন্তু দেহ ওইভাবেই পড়ে রয়েছে। অথচ কাশীপুর পুরসভার কাছ থেকে জানতে পেরেছি, তাদের কয়েক ঘণ্টা আগেই দেহ সৎকারের কথা জানিয়েছে হাসপাতাল।’