তিন মৃতদেহের পাশে রাত কাটালেন করোনাভাইরাস আক্রান্তরা! এমনটাই অভিযোগ উঠেছে কলকাতার আর্মহার্স্ট স্ট্রিটের মারোয়ারি হাসপাতালে। শুধু তাই নয়, দেহগুলি ওয়ার্ডে পড়ে থাকাকালীনই খাবার দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রোগীদের।
হাসপাতালের আইসিইউ-তে কোনও শয্যা খালি নেই। তাই জেনারেল কোভিড ওয়ার্ডেই ভরতি করা হয়েছিল করোনা রোগীদের। সেখানেই মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয় তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগীর। অভিযোগ, রাতভর ওই কোভিড ওয়ার্ডেই অন্যান্য রোগীদের সঙ্গেই পড়ে ছিল ওই তিনটি মৃতদেহ। বুধবার দুপুর পর্যন্ত তা সরানো হয়নি। পরে দু’টি দেহ সরানো হলেও একটি দেহ সেইভাবে পড়ে থাকে ওয়ার্ডে। আরও অভিযেগ, দেহে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ওয়ার্ডে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্যান্য করোনা রোগীরা। ক্ষুব্ধ রোগী ও তাঁদের পরিজনরা বিক্ষোভ দেখান হাসপাতাল চত্বরে।
ক্ষুব্ধ রোগীদের অভিযোগ, বারবার তাঁদের অসুবিধার কথা জানালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। আরও অভিযোগ, এই হাসপাতালের পরিষেবা ঠিক নয়। কারণ, ওয়ার্ডে করোনায় আক্রান্ত দেহ পড়ে থাকাকালীনই রোগীদের খাবার দেওয়া হয়েছে। যা চরম অমানবিকতার নজির। দেহগুলি সরানোর দাবিতে খাবার বয়কট করেন রোগীরা। দেহগুলি থেকে নির্গত গন্ধে টেকা দুষ্কর হয়ে উঠছে বলে জানান রোগীরা। একজন রোগী দাবি করেন, ‘সকাল থেকে খেতে পারছি না। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়বেন। চরম অব্যবস্থা হাসপাতালে।’
ঘটনা জানাজানি হতেই এদিন বেলার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে দু’টি দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু একটি দেহ তখনও ওই ওয়ার্ডেই পড়ে থাকে। অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছে পুরসভার কাঁধে। কর্তৃপক্ষের দাবি, মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পুরসভার। তাঁদের ফোন করলে জানানো হয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছে। সেকারণে রাত থেকে দেহগুলো সরানো যায়নি। ওয়ার্ডেই পড়ে থেকেছে তিনটি মৃতদেহ।