একুশের নির্বাচনে বাংলায় সিপিআইএমের ভরাডুবির কারণ জোট। প্রথম দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এভাবেই বেঙ্গল লাইনকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল। এবার দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে আইএসএফ–এর সঙ্গে জোট রাখা হবে কিনা তা নিয়ে প্পশ্ন তুলে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ যেন অথৈ জলে পড়ল। কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি যে মন্তব্য করেছেন, তাতে এই জল্পনা আরও উস্কে গিয়েছে। তিনি এই জোটকে শুধুমাত্র নির্বাচন–কেন্দ্রিক বলে আখ্যা দিয়েছেন বলে খবর সূত্রের।
কিথুদিন আগে আইএসএফ–এর পক্ষ থেকে বিদ্রোহ করা হয়েছিল। তাঁদের বক্তব্য ছিল, আমাদের সঙ্গে ঘন্টার মতো আচরণ করা হচ্ছে। যে পারছে বাজিয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে। এমনকী বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে সরব হয়েছিলেন নওশাদ সিদ্দিকি। এবার সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা যে সহমত নয়, সেটা বুঝিয়ে দিতে কসুর করেননি দলের সাধারণ সম্পাদক।
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেই সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গে সংযুক্ত মোর্চা গঠনের পিছনে ছিল নির্বাচনী কৌশল। এমনকী এই জোটকে নির্বাচনী পরিকল্পনার অংশ এবং আসন সমঝোতার রাজনীতি হিসেবেই দেখা উচিত বলে জানিয়েছেন ইয়েচুরি। ভোটসঙ্গী মানেই জোটসঙ্গী করে এগোতে হবে, তার কোনও মানে নেই বলেও মত তাঁর।
কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের মতে, মোর্চা হয়তো উপনির্বাচন বা পুরসভার নির্বাচনে থাকবে। সুতরাং ভাইজানের দল আর কতদিন একসঙ্গে থাকবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে সর্বভারতীয় প্রেক্ষাপটে সিপিআইএমকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। রাজ্যওয়াড়ি লড়াইয়ে স্থির হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর প্রেক্ষিত অনুসারে।’ ফলে মোটামুটি একলা চলার পথ তৈরির ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
কেন একুশের নির্বাচনে বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসকে এক করে দেখা হয়েছিল? তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তখন বেঙ্গল লাইনের নেতারা ব্যাখ্যা দেন, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় বিজেপি বেড়েছে। বিধায়ক সংখ্যা ৭৭ পৌঁছেছে ৩ থেকে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপিকে এক আসনে বসানো হয়েছিল। বৈঠকের তৃতীয় দিন, রবিবার পার্টি কংগ্রেসের দিনক্ষণ, স্থান নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।