আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে নেমেছেন। বিচারের দাবি তুলেছেন। স্লোগান উঠেছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। তার মধ্যেই ফাঁস হয়ে গিয়েছে অডিয়ো ক্লিপ। যা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে সিপিএম। কারণ তাদের দলের নেতার নামই জড়িয়েছে। যার ফলে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন তিনি। হ্যাঁ, তিনি কলতান দাশগুপ্ত। এই অডিয়ো যাচাই করেছে কলকাতা পুলিশ। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল যাচাই করেনি। সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই নেতার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তাই এবার বেশ কিছুটা সতর্ক সিপিএম।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রায় ৩৫ দিন ধরে আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে এখনও জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক হয়নি। যার জেরে এখনও রফাসূত্র বের হয়নি। এমন আবহে আর যাতে কোনও ঘটনা না ঘটে তাই সতর্কভাবে পা ফেলছেন সিপিএম নেতারা। বর্ধমানের এক সিপিএম নেতা ফোন করেন উত্তর হাওড়ার এক যুব নেতাকে। ফোন করেই বলেন, ‘তোর ফোনের নেট অন কর। হোয়াট্সঅ্যাপ কলে কথা বলব।’ তার পর তাই ঘটল। আবার অশোক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ শিলিগুড়ির এক সিপিএম নেতাকে আজ, রবিবার সকালে ফোন করেন হুগলির এক সিটু নেতা। সিকিম ঘুরতে যাওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যেও কথা হয়েছে সেই হোয়াটসঅ্যাপ কলে।
আরও পড়ুন: ‘তাঁরা যখনই কথা বলবেন তখনই সরকারকে রেডি থাকতে হবে!’, চন্দ্রিমার নিশানায় জুনিয়র ডাক্তাররা
এই আবহে কোনও অজুহাত দিয়েই সিপিএম নেতারা কলতান দাশগুপ্তর কৃতকর্মকে ঢাকা দিতে পারছেন না। বরং সাবধানী পদক্ষেপ হিসাবে হোয়াটসঅ্যাপ কলে কথা বলে বিপদ এড়াচ্ছেন। রবিবাসরীয় বিকেলে শ্যামবাজারে সিপিএমের ছাত্র–যুবদের অবস্থান মঞ্চের সামনে সমাবেশের ডাক দেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। বৃষ্টির জেরে এই সমাবেশ কী ভাবে জমায়েত হবে তা নিয়ে দক্ষিণবঙ্গের নেতারা আলোচনাও করছেন সেই হোয়াট্সঅ্যাপ কলে। একদা এই সিপিএম নেতারাই বাংলার কম্পিউটার ঢোকা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। কলতান গ্রেফতারের পরই যেভাবে দলের কর্মীরা সাবধানতা দেখাচ্ছেন সেটা থেকে স্পষ্ট যে পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন।
শনিবারই স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, দিদি হিসেবে এসেছেন তিনি। তখনই খবর আসে গ্রেফতার হয়েছেন কলতান দাশগুপ্ত, সঞ্জীব দাস। আদালত তাঁদের সাতদিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিপিএমের এক নেতা বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের সময়ে এই সাবধানতা আরও আগে থেকেই নেওয়া উচিত ছিল।’ তবে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘জাস্টিস ফর আরজি কর দাবিতে হওয়া গণআন্দোলনকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস সরকার বিজেপির দেখানো পথে হাঁটছে।’