সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এবার শ্লীলতাহানি ও হেনস্থা করার অভিযোগ তুললেন এক মহিলা সাংবাদিক। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে হেনস্থার ঘটনার বিবরণ দেন ওই মহিলা সাংবাদিক। এই ঘটনায় রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ওই মহিলা সাংবাদিক যে পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় তা শেয়ার করে ধিক্কার জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য। আজ রবিবার ফেসবুক লাইভে ওই সাংবাদিক অভিযোগ করেন, সকালে তিনি তন্ময় ভট্টাচার্যের বাড়ি যান সাক্ষাৎকার নিতে। তখন সিপিএম নেতা তাঁর কোলে বসে পড়েন।
এই ঘটনার খবর এখন পৌঁছে গিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফফর আহমেদ ভবনে। তবে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। মহিলা সাংবাদিক অভিযোগ করেন, আগেও নানাভাবে তন্ময় ভট্টাচার্য তাঁর সঙ্গে ‘কুৎসিত’ ব্যবহার করেছেন। কিন্তু আজ, রবিবার সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছেন সিপিএম নেতা। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘চার বছর সাংবাদিকতা করছি। কিন্তু এত খারাপ অভিজ্ঞতা আমার কখনও হয়নি। আসলে পোটেনশিয়াল রেপিস্ট এরাই। এদের চিনে রাখা দরকার। আমি বিষয়টাকে কোনওভাবে কন্ট্রোল করে ইন্টারভিউ নিই। কারণ এটাই আমার কাজ। মানসিকভাবে এত ইরিটেশন হচ্ছিল যে আমি এক্সপ্লেইন করতে পারব না।’
আরও পড়ুন: নারীপাচারের আন্তর্জাতিক চক্রের পর্দাফাঁস বঙ্গে, তিন পান্ডাকে গ্রেফতার করল পুলিশ
এই ঘটনা নিয়ে এখন জোর চর্চা হতে শুরু করেছে। তবে ওই মহিলা সাংবাদিক পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করবেন কিনা সেটা জানাননি। আর গোটা বিষয়টি ইয়ার্কি বলে চালাতে চেয়েছেন তন্ময় ভট্টাচার্য। সিপিএম নেতা বলেন, ‘আমি সবার সঙ্গে ইয়ার্কি করে থাকি। আগে ওই মেয়েটি অন্তত দশবার আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। ওর সঙ্গে আমি আগেও ইয়ার্কি করেছি। কিন্তু আজকে হঠাৎ কী হল আমি জানি না। একটা বাচ্চা মেয়ে। ওকে আমি মা বলে ডাকি। ও একথা বলবে ভাবতে পারছি না।’ পাল্টা ফেসবুক লাইভে মহিলা সাংবাদিক অভিযোগ করেন, ‘ইন্টারভিউ নেওয়ার আগে যখন উনি আমার কোলে বসে পড়েন তখন আমি তখনই বলি, এরকম করবেন না। আমি পছন্দ করি না। আপনি ইয়ার্কি করেছেন আমি মানছি। কিন্তু এসব আমার সঙ্গে করবেন না। তাও তিনি আমার কোলে বসে পড়েন। ক্যামেরা যদি তখন অন থাকত তাহলে কি ভাল হত?’
এখন পরিস্থিতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে সিপিএমের পার্টি সদস্য থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত মুখরা প্রকাশ্যে দাবি করতে শুরু করছেন যে, তন্ময়ের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সিপিএমকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যদিও মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগ নিয়ে সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘আমি ফেসবুক লাইভ দেখেছি। দেখে খারাপ লেগেছে। কিন্তু আমরা অন্য দলের মতো নই। আমাদের পার্টিতে কিছু প্রক্রিয়া আছে। সেই প্রক্রিয়া মেনেই আমরা পদক্ষেপ করব।’ আর দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি বয়স্ক মানুষ। তন্ময়বাবুকে আমি সম্মান করতাম। এখন তাঁর বিরুদ্ধে এরকম একটা অভিযোগ। মেয়েটা যা বলল, ও কিন্তু এর আগেও সিপিএম নেতাদের খুব ভাল ইন্টারভিউ করেছে। সেরকম জায়গা থেকে যখন এরকম অভিযোগ আসছে, তখন মনে হয় না অভিযোগ করার পিছনে কোনও কারণ থাকতে পারে। ওর সঙ্গে ক্যামেরাম্যানও ছিল। দু’জন মানুষ ভুল দেখতে পারে না।’