মহিলা সাংবাদিকের কোলে বসে পড়ার জেরে সিপিএম তন্ময় ভট্টাচার্যকে সাসপেন্ড করে। মহিলা সাংবাদিকের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ বলে কথা। দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। বসে পড়ে অনুসন্ধান কমিটি। কিন্তু প্রায় আড়াই মাস কেটে গেলেও সিপিএমের সাসপেন্ডেড নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য এখনও জানতে পারলেন না তিনি দোষী, নাকি নির্দোষ। অর্থাৎ এখনও সিপিএম সিদ্ধান্ত নিতে পারল না তন্ময় ভট্টাচার্যের বিষয়ে কোন পথে হাঁটবেন। অনুসন্ধান কমিটি কি থমকে গিয়েছে? উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়টি নিয়ে যদি সিপিএম আরও দেড় মাস দেরি করে তাহলে দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনে তন্ময়ের যোগদান একপ্রকার অনিশ্চিত।
এই আড়াই মাসে তন্ময় ভট্টাচার্য বারবার বরাহনগর থানা এবং সিপিএম পার্টি অফিসে বারবার গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হয়েছেন। ফলাফল শূন্য। এই আবহে নিজের বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে ফেলেছেন তন্ময় ভট্টাচার্য। জেলা সম্মেলনে তন্ময় ভট্টাচার্য প্রতিনিধি না হতে পারলে রাজ্য সম্মেলনেও থাকতে পারবেন না। সুতরাং তন্ময় ভট্টাচার্য সাসপেন্ড হয়ে এখন দিশেহারা অবস্থায় রয়েছেন। সিপিএমের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি তাহলে কী কাজ করল? উঠছে প্রশ্ন। এই কমিটির তিন সদস্য অঞ্জু কর, শ্যামলী প্রধান এবং সুমিত দে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন তন্ময় ভট্টাচার্যকে।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গের দুটি বন্ধ চা–বাগান খুলে দিচ্ছে রাজ্য সরকার, উৎসবের মরশুমে খুশি শ্রমিকরা
কিন্তু ওই জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্তই। আর কিছু এখনও এগোয়নি বলেই সূত্রের খবর। তাই সাসপেন্ড অবস্থাতেই রয়েছে তন্ময় ভট্টাচার্য। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এই সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তাহলে অভিযোগের তদন্ত এত ঢিমেতালে চলছে কেন? উঠছে প্রশ্ন। এই আড়াই মাসে কমিটি মাত্র একবার ডেকেছে তন্ময় ভট্টাচার্যকে। আর ডাকা হয়নি। কবে কমিটি তন্ময় ভট্টাচার্যকে দোষী বা নির্দোষ ঘোষণা করবে? এই বিষয়ে কমিটির সদস্য অঞ্জু কর বলেন, ‘আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। কারণ শুনানি প্রক্রিয়া এখনও চলছে।’ ব্যারাকপুর কমিশনারেট একাধিকবার তন্ময়বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এখন বিষয়টি নিয়ে চর্চা হতে শুরু করেছে। কিন্তু অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পুলিশের কোনও বাধা নেই। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘চুপ করে বসে রয়েছি। সিপিএমে এখন সাংগঠনিক সম্মেলন চলছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলন হবে। কমিটির তদন্ত প্রক্রিয়ায় গতি দেখেই অনেক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই দেরি হওয়ার পিছনে অন্য কোনও পরিকল্পনা আছে কিনা সেটাই এখন দেখার।’ তবে নীরব আছেন তন্ময় ভট্টাচার্য।