লক্ষ্য ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচন। আর তাই এখন সিপিএমের রাজ্য দফতর মুজফফর আহমেদ ভবন ‘হাইটেক’ পার্টি অফিসে পরিণত হচ্ছে। জেলা পার্টি অফিসগুলিতেও বসছে কম্পিউটার। একদা এই দলই কম্পিউটারের বিরোধী ছিল। কিন্তু কালের গতিতে প্রযুক্তিকেই এখন আঁকড়ে ধরছে। সিপিএমের যে ডিজিটাল টিম আছে তারা এবার সব জেলাতেই যাবে। কারণ সেখানে গিয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সিপিএমের হয়ে কেমন প্রচার করতে হবে? কোন বিষয়গুলির উপর জোর দিতে হবে? দলীয় কন্টেটের রিচ কেমন করে বাড়াতে হবে? এমন সব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। যা প্রভাব ফেলবে ভোটবাক্সে।
এদিকে বাংলার মানুষের মন বুঝতে সিপিএমের ডিজিটাল টিম একটি মোবাইল অ্যাপ নিয়ে আসতে চলেছে। সেটা দলের কমরেডদের কাছে থাকবে। যাঁরা বুথস্তরের কর্মী, জেলার কর্মী এমনকী ব্লকস্তরের কর্মীদের মোবাইলেও থাকবে। এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রাজ্য পার্টি অফিস থেকে প্রতিনিয়ত জেলাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হবে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে যাতে সিপিএমকে সক্রিয় করা যায় তাই এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক জেলার তথ্য তুলে ধরা থেকে শুরু করে রাজ্যজুড়ে নানা কর্মসূচি এবং কেন্দ্র–রাজ্য সরকারের ইস্যুভিত্তিক বিরোধিতা করা হবে। তার জন্য তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরা হবে।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারে তরুণীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ই দেহ মিলল, গ্রেফতার অভিযুক্ত
অন্যদিকে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি তারিখ থেকে ডানকুনিতে শুরু হচ্ছে রাজ্য সম্মেলন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘সম্মেলেন চলছে বলে ঢেলে সাজানোয় সময় লাগছে। কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্য পার্টি এবং জেলা পার্টি অফিসের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে। দলের লড়াই আন্দোলন সংগ্রাম তুলে ধরা হবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং প্রচার করা হবে আমাদের নীতি–আদর্শের কথা।’ এখন কালিম্পং ছাড়া সমস্ত জেলাতেই ডিজিটাল টিম তৈরি হয়ে গিয়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলকে টক্কর দিতেই এই পদক্ষেপ বলে সূত্রের খবর।
এছাড়া মানুষের মন বুঝতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শক্তিশালী হতে চাইছে সিপিএম। মানুষ কী চায়? সেটা জানতে অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। ডেটা সংগ্রহ করে সেন্টিমেন্ট অ্যানালিসিস করা হবে। কিন্তু এভাবে কি মানুষের মন বোঝা সম্ভব? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এভাবে কম্পিউটার বিরোধী তকমা গা থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও প্রত্যেক বুথে এজেন্ট দিতে পারে না সিপিএম সেখানে টেক স্যাভি কমরেড গড়ে তুলে কতটা রাজ্য–রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাবে বা শূন্যের গেড়ো কাটানো যাবে তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই।