বাড়িতে মহিলা সাংবাদিকের কোলে বসে পড়ার ঘটনায় যারপরনাই চাপ সামলাতে হচ্ছে তন্ময় ভট্টাচার্যকে। আজ, শনিবার তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছেন সিপিএম থেকে সাসপেন্ড হওয়া নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য। এদিনই আলিমুদ্দিনে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। কথা দিয়েছিলেন যাবেন। সে কথা রেখেছেন। তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে সিপিএম। যাঁর নেতৃত্বে আছেন অঞ্জু কর। আরও দুই সদস্য হলেন, নদিয়ার জেলা সম্পাদক সুমিত দে এবং নানুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক শ্যামলী প্রধান। দুপুরে আলিমুদ্দিনে যান তন্ময় ভট্টাচার্য। দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছিল বলেই তাঁকে সাসপেন্ড করে পার্টি। কিন্তু এখনও সংশ্লিষ্ট ঘটনাকে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তন্ময় বলে উঠছে অভিযোগ।
যে সময়ে তন্ময় ভট্টাচার্যকে ডাকা হয়েছিল তার একটু আগেই মুজফফর আহমেদ ভবনে পৌঁছন সাসপেন্ডেড নেতা বলে সূত্রের খবর। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির তিন সদস্য আগেই আলিমুদ্দিনে চলে এসেছেন। ইতিমধ্যেই তাঁরা তন্ময় ভট্টাচার্যের সামনে নানা প্রশ্ন তুলে কথা বলছেন। সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু মহিলা সাংবাদিকের কোলে কেন বসলেন? এই প্রশ্নেই চাপ বাড়ছে তন্ময়বাবুর বলে সূত্রের খবর। ২৭ অক্টোবরের ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁকে। তবে আজ পার্টি অফিসে ঢোকার মুখে শুধু বলেন, ‘পার্টি ডেকেছে তাই এসেছি’।
আরও পড়ুন: সন্দীপ–অভিজিতের মোবাইল থেকে মুছে ফেলা তথ্য পেল সিবিআই, গতি কি ঘুরবে তদন্তের?
পার্টি ডেকেছে সেটা ঠিকই। কিন্তু যে কারণে ডেকেছে সেটা নিয়ে একটাও কথা বলেননি তন্ময় ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, ‘আমার আলাদা করে কোনও অভিযোগ নেই।’ তিনি এখন আবার বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছেন। তন্ময়ের কীর্তি ফাঁস হয় যখন ওই ঘটনার পর মহিলা সাংবাদিক ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করেন, সাক্ষাৎকার নিতে বাড়িতে গেলে তন্ময় ভট্টাচার্য তাঁর কোলে বসে পড়েন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সিপিএমের পক্ষ থেকে সেদিনই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা খতিয়ে দেখবে দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির রিপোর্ট দেখে তারপর পদক্ষেপ করা হবে।
এবার যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তন্ময় ভট্টাচার্যকে তাতে বিস্তর বিড়ম্বনা তৈরি হচ্ছে তাঁর। কারণ এখন সিপিএম নতুন প্রজন্মের হাত ধরে নতুন করে গড়ে উঠছে। সেখানে কোনও ঘটনা যা দলকে কালিমালিপ্ত করে তা বরদাস্ত করবে না সিপিএম। এই বার্তা প্রত্যেককে আগেই দেওয়া হয়েছিল। সেখানে তন্ময় ভট্টাচার্যের ঘটনা নিয়ে দলকে যথেষ্ট অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। মহিলা সাংবাদিক সাক্ষাৎকার নিতে গেলে তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সুতরাং এখন উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারলেই তবেই নিজেকে বাঁচাতে পারবেন তন্ময়। মনে রাখতে হবে, সুশান্ত ঘোষের মতো নেতাকেই পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে সিপিএম।