বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে করোনাভাইরাস মহামারী। হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়ছেন। রাজনৈতিক দলও প্রচণ্ড অর্থাভাবে ভুগছে। এই তালিকায় আজ জায়গা করে নিয়েছে সিপিআইএম। তাই কলকাতা জেলা কমিটি মানুষের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অর্থ সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। কারণ করোনাভাইরাসের প্রকোপ। তাই অনলাইনই মাধ্যম। করোনা আক্রান্ত নেতা–কর্মীদের চিকিৎসার খরচ সামলাতেই এই পদক্ষেপ বলে সূত্রের খবর।
ফেসবুক, নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ–সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস দিয়ে এই সাহায্য চেয়েছিলেন জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার। ইতিমধ্যেই ১০ হাজার থেকে ১০ টাকা—সব ধরনের সাহায্য আসতে শুরু করেছে বলে খবর। এই প্রথম অনলাইনে তহবিল সংগ্রহের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। আর যাবতীয় হিসেবপত্রের উপর পৃথকভাবে নজরদারি চালানোর জন্য কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছেন কল্লোলবাবু।
কেন এই উদ্যোগ নিতে হল দলকে? উঠছে প্রশ্ন। জানা গিয়েছে, করোনার জেরে অর্থসংগ্রহের কাজ করা যায়নি। আর পার্টির বহু সদস্যের চাকরি চলে গিয়েছে। ফলে আয় কমেছে। লেভি খাতে আদায় কমেছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। বকেয়া লেভি চাওয়া যাচ্ছে না। ফিক্সড ডিপোজিটের সুদও আগের তুলনায় কমে গিয়েছে। তুলনায় খরচ বেড়েছে অনেকটাই। সেখানে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত নেতা–সর্বক্ষণের কর্মীদের চিকিৎসা খাতে অন্তত ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। আবার রেড ভলান্টিয়ারদের কাজেও বহু টাকা সাহায্য করতে হচ্ছে। এছাড়া সর্বক্ষণের কর্মীদের মাসিক ভাতা বাবদ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা গুনতে হচ্ছে। আর বিদ্যুৎ, ফোন, গাড়ির জ্বালানি–সহ জেলার অফিস চালানোর জন্য বহু লক্ষ টাকা খরচ রয়েছে। একুশের নির্বাচনেও মোটা টাকা খরচ হয়েছে।
এখন খরচ বাড়লেও আয় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জেলা পার্টির এক নেতার কথায়, ‘তহবিলের অবস্থা করুণ। এভাবে চলতে থাকলে পার্টি অফিস খোলা রাখাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এবার অনলাইনে সরাসরি জনতার কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। পথে নেমে এখন অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে এবার অনলাইনের পথ নেওয়া হয়েছে। দেখা যাক কতটা সাহায্য পাওয়া যায়।’