বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বাংলায় সিপিএম সাম্রাজ্যের শেষ মুখ্য়মন্ত্রী। সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন তিনি। সোমবার মৌলালি যুবকেন্দ্রে ডিওয়াইএফআইয়ের উদ্যোগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণসভা হয়েছিল। সেখানে ভাষণ দিতে গিয়ে সিপিএমের যুব সংগঠনের প্রাক্তন নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, বুদ্ধদা রাজনীতিতে নাম। আমাদের কাছে আদর্শ, বিশ্বাস। বর্তমানে যুব সমাজ ও সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের উপর বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে। আমাদের উপর বিশ্বাসের সঙ্কট আছে। বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। সেরকম নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আত্মস্থ করতে হবে। তাঁর লক্ষ্য় নিয়ে যুব সমাজের কাছে হাজির করতে হবে। তবেই আমরা পুরনো দিনের আলোয় ফিরতে পারব।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যে দলটা দীর্ঘ ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল, যে দল যখন বাংলায় ক্ষমতায় ছিল তখন বিরোধীরা কার্যত গুটিয়ে থাকত বাংলায়। মাথা তুলতে ভরসা পেত না। তবে সেই সিপিএম এখন ক্ষয়িষ্ণু। পঞ্চায়েতের একটা আসন পেতেই হিমসিম খায়। তবে নানা ক্ষেত্রে ঘুরে দাড়াতে একেবারে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বামেরা।
বাম নেতা রবীন দেব বলেন, আদর্শ, নিষ্ঠা, লক্ষ্য, দৃঢ়তা, প্রত্যয় মানুষের কাছে উপস্থিত করেছেন বুদ্ধবাবু। সেই সঙ্গেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন মুখ্য়মন্ত্রী ছিলেন তখন রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের নানা দিক সম্পর্কে একটি তথ্য়চিত্র দেখানো হয়েছে।
স্মরণসভায় সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, শিয়ালদা কোর্টে মিথ্যের বেসাতি হল। সব উত্তর আমাদের চাই। এই বিচারের লড়াই লড়তে হবে। লোয়ার কোর্টের রায় বেরিয়ে গেলেই সেটা বিচার হতে পারে না। মানুষকে আরও বেশি সংগঠিত করতে হবে। সেই কাজটা যুুব সংগঠনকে করতে হবে। সেই সঙ্গেই সেলিমের সংযোজন, এমন কিছু কর্মসূচি নিতে হবে যাতে এই প্রজন্ম বুদ্ধদার কর্মময় জীবন থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, হান্নান মোল্লা যে কথাগুলি বলেছেন তা যেন কিছুটা নিজেদের দিকে ফিরে তাকানো। দেখে নেওয়া কোথায় মূল দুর্বলতাটি থেকে গিয়েছে। আর সেখানেই চোখে পড়ে সবার আগে বিশ্বাসযোগ্যতা। কেন সিপিএমকে আর আগের মতো বিশ্বাস করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ? তবে কি চাকরি, কাজের প্রলোভন দেখিয়ে সিপিএম নেতারা ক্ষমতায় থাকাকালীন তাঁদের চারদিকে একটা করে বলয় তৈরি করে রাখতেন? আর ক্ষমতা চলে যেতেই বলয় ভ্য়ানিস, নেতার পাশ থেকে সরে গেলেন জনতার বড় অংশ।