গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যে বামেদের দুরবস্থা চলছে। বিধানসভায় একজনও প্রতিনিধি নেই। তারপর ১০৮ টি পুরসভার মধ্যে শুধুমাত্র একটি পুরসভা দখল করতে পেরেছে বামেরা। দলের অস্তিত্ব যে সংকটে রয়েছে সে কথা একপ্রকার স্বীকার করে নিয়ে পরিস্থিতির মোকাবেলায় দলের নেতাকর্মীদের আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিলেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। মঙ্গলবার থেকে কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সিপিএমের ২৬ তম রাজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছে। সেই সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বামেদের দুরবস্থার কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন সূর্যবাবু। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এরাজ্যে কখনও বামেদের এত কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়নি।’
বর্তমানে বামেদের জনসমর্থন যে কমে গিয়েছে সে কথাও কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বাম নেতারা। রাজ্য সম্মেলনে সূর্যবাবু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জনসমর্থন যে কমে গিয়েছে তা তথ্যেই দেখা যাচ্ছে।’ যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বামেদের। এরজন্য নেতাদের অনেকেই দায়ী করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সিতারাম ইয়েচুরি। তিনি মনে করেন, ‘অনেকেই এখনও অবধি পদে বা কমিটিতে রয়েছেন যারা ঠিক মত কাজ করছেন না।’ এই পরিস্থিতিতে দলকে নতুন ভাবে সাজানো উচিত বলে তিনি মনে করেন। পরিস্থিতির মোকাবেলা করার জন্য আন্দোলন এবং সংগ্রাম গড়ে তোলে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে সূর্যকান্ত বাবুও মনে করেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে সিপিএমের ২৫ তম সম্মেলন হয়েছিল ২০১৮ সালে অর্থাৎ ৪ বছর পর রাজ্য সম্মেলন হল সিপিএমের। এই সম্মেলনে সিপিএমের সদস্য সংখ্যা নিয়ে রিপোর্ট তুলে ধরা হয়। সিপিএম সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে বাংলা সিপিএমের সদস্য সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৪০। ২০২১ সালে পুনর্নবীকরণের পরে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৮২০। সদস্য কমেছে প্রায় ২৪ হাজার। আর তারইমধ্যে দেখা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ সদস্য নিষ্ক্রিয় থাকছেন। অনেকে মনে করছেন, সিপিএমের ছাত্রসংগঠন ভালো কাজ করলেও দলের নেতাদের সেভাবে সংগ্রামে না দেখা যাচ্ছে না যার ফলে দল জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। উল্লেখ্য, সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন চলবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কিভাবে পরিস্থিতির মোকাবেলা করে দল আবার ঘুরে দাঁড়াবে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে এই সম্মেলনে।