ঘূর্ণিঝড় আমফান নিয়ে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, প্রকৃতির কথা আগে থেকে বোঝা যায় না। তাই সাবধান থাকাই ভাল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবিলায় ইতিমধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার। বুধবার বেলা ১২টা থেকে ২টোর মধ্যে এই ঝড় উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ঝড়ের তাণ্ডব চলতে পারে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যে উপকূলবর্তী ৩ জেলায় আশ্রয় শিবিরগুলিতে সাধারণ মানুষকে সরানো হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩ লক্ষ মানুষকে সরিয়েছে সরকার। তার মধ্যে ২ লক্ষ দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও ৫০ হাজার মানুষকে উত্তর ২৪ পরগনায় সরানো হয়েছে।
মমতা বলেন, বুধবার বেলা ১২টার পর কোনও কারণেই বাড়ির বাইরে বেরনোর দরকার নেই। যারা কাঁচা বাড়িতে থাকেন তাদের আশ্রয় শিবিরে যেতে অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, সেখানে খাবার, জল, শৌচাগার ও শিশুখাদ্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রেখে আশ্রয় শিবিরে থাকতে অনুরোধ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘বাড়ির মতো তো সম্ভব নয়। কিন্তু কারও যাতে সমস্যা না হয় সেই ব্যবস্থা করেছে সরকার।’
সঙ্গে সরকার ঘোষণা না করা পর্যন্ত কাউকে বাড়ি বা আশ্রয় শিবির থেকে না বেরোতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটা ঘূর্ণিঝড়ের তিনটে অংশ থাকে। মাথা, চোখ আর লেজ। মাথা চলে গেলে ঝড় থেকে গিয়েছে ভেবে কেউ বাইরে বেরিয়ে পড়বেন না। লেজ না যাওয়া পর্যন্ত বিপদ কাটবে না। তাই ঝড় চলে গেছে বলে মনে হলেও আবার তা ফিরে আসতে পারে। ফণির সময় উড়িষ্যায় এভাবে অনেকের মৃত্যু হয়েছিল। বুধবার বেলা ১২টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত সবাইকে বাড়িতে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বলে রাখি, প্রবল শক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগোচ্ছে সুপার সাইক্লোন আমফান। বুধবার বেলা ১২টা থেকে বিকেলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে এই ঝড়। যার জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে অনেক রকম বলছেন। কেউ বলছেন এটা আয়লার থেকেও শক্তিশালী হতে পারে।’