ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে সাময়িক স্বস্তি পেলেন শিক্ষকরা। ডিএলএড কোর্স শেষ হলেও শংসাপত্র পাচ্ছিলেন না রাজ্যের হাজার-হাজার প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষকরা। অভিযোগ উঠেছিল, শংসাপত্র প্রদান করছে না ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং (এনআইওএস)। সেই শংসাপত্র না পাওয়ায় যেমন চাকরি নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে, তেমন বর্ধিত বেতন থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন শিক্ষকরা। সেই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন শিক্ষকরা।
শুক্রবার সেই মামলাটি ওঠে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে। বিচারপতি জানিয়েছেন, বিচারপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। তিন সপ্তাহ পর আবারও শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সেদিন রাজ্যের আডভোকেট জেনারেল এবং কেন্দ্রের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
মামলাকারীদের বক্তব্য, ২০০৯ সালে সালের শিক্ষার অধিকার আইন অনুয়ায়ী ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিল যে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষককে প্রশিক্ষিত হতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য এনআইওএসকে দায়িত্ব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ ও উন্নয়ন মন্ত্রক (বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রক)। সেইমতো দু'বছরের ডিএলএড কোর্সে ভরতি হয়েছিলেন লক্ষাধিক শিক্ষক। কিন্তু পরে এনআইওএসয়ের তরফে জানানো হয়, কোনও শিক্ষক যদি উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশের কম নম্বর পেয়ে থাকেন, তবে নির্দিষ্ট সময়ের প্রশিক্ষণ নিলেও তাঁকে শংসাপত্র দেওয়া হবে না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের আবারও উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে ৫০ শতাংশের উপর নম্বর পেতে হবে। তবেই মিলবে ডিএলএড সার্টিফিকেট। তার জেরে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাজার-হাজার প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক। সেই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তাঁরা।
মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছেন, NCTE-র বিজ্ঞপ্তি অনুয়ায়ী একজন প্রার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে অথবা টিচার্স ট্রেনিং অথবা স্নাতক ও টিচার্স ট্রেনিং করতে হবে। সুতরাং স্নাতক ডিগ্রি থাকা মানে তার ন্যূনতম যোগ্যতা রয়েছে। যে শিক্ষকদের এই ন্যূনতম যোগ্যতা আছে, তাঁদের অবিলম্বে শংসাপত্র প্রদান করা উচিত। কিন্তু অসংখ্য শিক্ষককে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা মামলা করেন।