স্কুলের শিক্ষিকার উপরই মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আর তার জেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ওই শিক্ষিকা। আর এই আত্মহত্যা করার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন ওই শিক্ষিকা। যেখানে স্কুলের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রেখে গিয়েছেন তিনি। যদিও ভিডিয়ো যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। তবে তা প্রকাশ্যে আসতেই এবার পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মৃত শিক্ষিকার পরিবারের সদস্যরা। দ্রুত বিচারের দাবিও তুলেছেন তাঁরা। দক্ষিণেশ্বরের এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে বরাহনগর মাতৃমন্দির লেন অঞ্চলে।
এদিকে ওই শিক্ষিকা স্বামীর মৃত্যুর পর স্কুলে চাকরি করতে শুরু করেন। টানা কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে কর্মরত ছিলেন ওই শিক্ষিকা। তবে এবার ওই স্কুলের বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ তুলে ভিডিয়ো পোস্ট করে নিজের বাড়িতে আত্মঘাতী হলেন ওই শিক্ষিকা। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম জসবীর কউর (৫৮)। দক্ষিণেশ্বরের খালসা মডেল স্কুলের কিন্ডারগার্টেন বিভাগে শিক্ষিকা ছিলেন। পোস্ট করা ভিডিয়োতে ওই শিক্ষিকার অভিযোগ, স্কুলে কাজের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। নানাভাবে মানসিক নির্যাতন ও হেনস্থা করছেন প্রিন্সিপাল এবং স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যরা। কাজ হারানোর আশঙ্কা থাকছে। এরপরই বাড়ি ফিরে আত্মহত্যা করেন জসবীর। আজ, শুক্রবার সাগর দত্ত সাগর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হবে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক পড়ুয়ার সব বিষয়ে নম্বর সেঞ্চুরির পথে, জীবনবিজ্ঞানে খরা, অবাক কলকাতা হাইকোর্ট
অন্যদিকে ওই শিক্ষিকার বাড়ি দক্ষিণেশ্বর থানার অন্তর্গত বরাহনগর মাতৃমন্দির লেন এলাকায়। ২০০৩ সালে স্বামী মারা যান। তখন থেকেই শুরু করেন স্কুলে শিক্ষকতা। গত পাঁচ বছর ধরে স্কুলের নতুন ম্যানেজমেন্ট এবং প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হতে দেখা গিয়েছিল শিক্ষিকা জসবীর কউরকে। তাই তাঁকে হেনস্থা এবং মানসিক নির্যাতন করা শুরু হয় বলে অভিযোগ। তা সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন শিক্ষিকা বলে ভিডিয়োয় উল্লেখ করেছেন। ওই ভিডিয়ো দেখেই বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে জসবীরের ফ্ল্যাটে যান তাঁর ভাই। দরজা ভেঙে ঢুকে দেখেন শিক্ষিকার ঝুলন্ত দেহ।
এছাড়া ওই ভিডিয়োয় ন্যায়বিচার চেয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন ওই শিক্ষিকা আত্মহত্যার আগে। পুলিশ সূত্রে খবর, দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ ময়নাতদন্ত হবে। মৃতার ‘সুইসাইড ভিডিয়ো’ যাচাই করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আর মৃত শিক্ষিকার ভাই বলেন, ‘ওর সঙ্গে চার বছর ধরে স্কুলে মানসিক অত্যাচার করা হচ্ছিল। স্কুল থেকে ফিরে বলত, খুব অত্যাচার করছে। কুড়ি বছরের বেশি পড়াচ্ছিলেন। আমার জামাইবাবুর মৃত্যুর পর ওকে চাকরি দিয়েছিল স্কুল। প্রিন্সিপাল তো খুবই অত্যাচার করতেন। চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হতো।’